সড়ক দুর্ঘটনার কারণে মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে। আহতদের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। কিন্তু সড়ক নিরাপদ করতে সরকারের, যাত্রীর বা চালকদের যে দায়িত্ব তা পালন করতে দেখা যাচ্ছে না। সড়কে এ হতাহতর পরিসংখ্যান তুলে ধরে সবার মধ্যে জনসচেতনতা গড়ে তোলা ও তথ্য- উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সরকারের পক্ষে যথাযথ উদ্বেগ নেওয়ার সহায়তা করার উদ্দেশ্যে এসব পরিসংখ্যান প্রণয়ন ও প্রকাশ করে থাকে সড়কের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি নিয়মিত মাসত্তয়ারি সড়কের হতাহতের পরিসংখ্যান প্রকাশ করে থাকে। তাদের সর্বশেষ প্রকাশিত পরিসংখ্যান বলছে, ফেব্রুয়ারি মাসের চেয়ে মার্চে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বেশি। ফলে হতাহতের ঘটনাও বেশি। সংখ্যার দিক থেকে তারতম্য হলেও এটা ঠিক যে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। অথচ বিআরটিত্র এতে তথ্য বিভ্রান্তি খুঁজছে। আর তাই তারা গত ১১ এপ্রিল সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংগঠনকে চিঠি দিয়ে বলেছে, সরেজমিনে তথ্য যাচাই বাছাই পূর্বক সেটা বিআরটিএকে অবহিত করে প্রকাশ করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা ক্রমান্বয়ে বেড়ে যাওযায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে বিআরটিত্র এমন উদ্যোগের কথা ভাবছে। সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিকার বা নিয়ন্ত্রণ না করে তাদের চিঠি দেওয়াকে নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বরং সরকার এসব তথ্য পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে সড়ক নিরাপদ করতে উদ্বেগই হতে পারে। মূলত দেশে প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকা বা অনলাইনে সড়ক দুর্ঘটনার খবর থেকে পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়। এ ছাড়া থানায় এজাহার থেকেও পরিসংখ্যান তথ্য নেওয়া যেতে পারে। তবে সারাদেশের সড়ক দুর্ঘটনার এজাহারে সব সময় থানায় করা হয় না। আবার সড়ক দুর্ঘটনার সব খবর গণমাধ্যমেও আসে না। ফলে প্রকৃত চিত্র পাওয়া দুষ্কর হয়ে ওঠে। অন্যদিকে পরিসংখ্যান তৈরিকারী সংস্থাগুলো কেউ একডজন পত্রিকা, কেউ দু’ ডজন পত্রিকার খবর সূত্র হিসেবে ব্যবহার করে। প্রকাশিত তথ্যে গড় মিল দেখা দেওয়া স্বাভাবিক। অবশ্য পরিসংখ্যান তৈরিকারী সংস্থাগুলো উৎস সূত্র উল্লেখ করে থাকে। বিআরটিত্র সব বিভ্রান্তি দূর করতে তারা নিজেরা প্রতিমাসে পরিসংখ্যান প্রণয়ন করে তা প্রকাশ করতে পারে। কিন্তু তারা না করে যারা এসব পরিসংখ্যান যাচাই বাছাই করতে কেন চাইবে? সড়ককে নিরাপদ করতে সরকারের দায়িত্ব বেশি। তাই পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। সংখ্যার বিচার করে বিভ্রান্ত না হয়ে সড়ক নিরাপদ করা জরুরি।