কচুয়া উপজেলার শংকরপুর গ্রামের অধিবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিরাজুল ইসলাম (৭৩) এর মরদেহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার বিকালে শংকরপুর আদর্শ দাখিল মাদ্রাসা মাঠ প্রাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। জানাজা শেষে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ইবনে আল জায়েদ হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকস দল এই বীরমুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এরপর মরদেহ যথাযোগ্য মর্যাদায় শংকরপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিরাজুল ইসলাম উপজেলার পালাখাল মডেল ইউনিয়নের শংকরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। তিনি ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় ২মাস চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকাকালীন শনিবার মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে ও ১ মেয়েসহ বহুগুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
মরহুমের বড় ছেলে তৌহিদুল ইসলাম শামীম পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে কর্মরত রয়েছেন। ছোট ছেলে প্রকৌশলী ইসলামুল হক শিমুল স্কয়ার গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন এবং তাঁর মেয়ে আমেনা আক্তার সুমি সিনিয়র অডিট অফিসার বাংলাদেশ সচিবালয়ে কর্মরত আছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। পরে তিনি ভারতের পালাটোনা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সেক্টর কমান্ডার মেজর এটিএম হায়দারের নেতৃত্বে ২নং সেক্টরে ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ করেন। মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর বি.আ.ডি.এস এর রিসার্চ অফিসার পদে চাকরিতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তিনি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার ধড্ডা পপুলার উচ্চ বিদ্যালয়ে, কচুয়া উপজেলার পালাখাল ছালেহিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা ও সিংআড্ডা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম যেমন রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তেমন একজন ভালো শিক্ষক ও সমাজসেবী ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন-ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মবিন, জাবের মিয়া, আনোয়ার হোসেন সিকদার,পালাখাল রোস্তম আলী ডিগ্রি কলেজের ভূগোল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইকবাল উদ্দিন আহমেদ মিঠু সহ অন্যান্যরা। এ সময় কচুয়া থানার ওসি মো. ইব্রাহিম খলিল, ডা. তারেক উদ্দিন আহমেদ, ইউপি সদস্য মামুনুর রশিদ সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।