বর্তমানে দেশে কার্ডের পরিবর্তে অ্যাপস, কিউআর কোড ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। মুঠোফোনই হয়ে উঠছে লেনদেনের বড় মাধ্যম। ব্যাংকগুলোর ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড এবং বিকাশ, রকেট, নগদ, উপায়,মাই ক্যাশ,ট্যাপের মতো এমএফএসের কারণে সাধারণ মানুষ ডিজিটাল লেনদেনে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। ডিজিটাল লেনদেন নগদ টাকা বহনের ঝামেলা কমিয়ে দিয়েছে। জীবনকে সহজ করে দিয়েছে। আর ডিজিটাল রেকর্ড থাকছে প্রতিটি লেনদেনে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও সুইজারল্যান্ডের মতো দেশগুলো ব্যাংক নোট ও মুদ্রার ব্যবহার কমিয়ে ‘নগদবিহীন অর্থনীতির’ দিকে যাত্রা করছে। খুব দ্রুতই উন্নত দেশগুলো কাগজ ও ধাতব মুদ্রানির্ভর লেনদেন কমিয়ে নগদবিহীন অর্থনীতিতে পরিণত হবে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক ‘কিউআর কোড’-এর মাধ্যমে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা চালু করেছে। কিউআর (কুইক রেসপন্স) কোডের ব্যবহার বাড়লে টাকা বহনের এবং ভাংতি করার ঝামেলা ছাড়াই লেনদেন করতে পারবেন ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় উদ্যোক্তারা। কিউআর কোডের মতো নগদবিহীন লেনদেন ব্যবস্থা জনপ্রিয় হলে বড় কিংবা ছোট অঙ্কের লেনদেনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। তাতে ছাপানো টাকার লেনদেনের হারও কমে আসবে। এখন ডিজিটাল লেনদেন বলতে চোখের সামনে বোঝায় কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, অ্যাপস ও এমএফএসকে। তবে এমএফএসের পুরোটাই ডিজিটাল হয়ে ওঠেনি। টাকা জমা করতে এখনো বেশির ভাগই নগদ টাকা নিয়ে এজেন্টদের কাছে জমা করেন। আবার নগদ টাকা উত্তোলনও হয় প্রায় সমপরিমাণ। এদিকে ব্যাংকের গ্রাহকেরা ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা ও অ্যাপস ব্যবহার করে মাসে ৩৩ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা লেনদেন করছেন। এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে প্রতি মাসে পরিসেবা
বিল জমা হচ্ছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। জানুয়ারিতে এমএফএসে এক লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলেও ডিজিটাল লেনদেন হয়েছে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকার। ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের মাধ্যমে প্রতি মাসে লেনদেন হচ্ছে প্রায় ৬২ হাজার কোটি টাকা। মূলত সরকারি বেতন ভাতা, এক হিসাব থেকে একাধিক হিসাবে টাকা পাঠানোসহ বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক লেনদেনে ইএফটি ব্যবহার হচ্ছে। ক্লিকেই টাকা চলে যাচ্ছে গ্রাহকের হিসাবে। এতে সরকারি ও বেসরকারি হিসাবে এসেছে স্বচ্ছতা। এমএফএস দিয়ে কেনাকাটা, মোবাইল রিচার্জ, পরি সেবা বিল পরিশোধ এর পুরোটাই হচ্ছে ডিজিটাল মাধ্যমে। কিউআর কোড ব্যবহার ও সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে দেশে নগদবিহীন লেনদেনের ইতিহাসের অংশ হতে কাজ করে যাচ্ছে মাস্টারকার্ড। বিশ্বে অনেক দেশেই ডিজিটাল লেনদেনকে জনপ্রিয় করতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। তার সুফলও পেয়েছে দেশগুলো। সরকার স্মার্ট বাংলাদেশের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, সেটি বাস্তবায়ন করতে হলে এ খাতে প্রণোদনা দেওয়া দরকার।