চাঁদপুরের মতলব মতলব দক্ষিণে ৫৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে অধিকাংশই বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে হয়েছে বলে জানায় মতলব দক্ষিণ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ। সূত্রটি জানায়, ২০২২ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত তারা ৫৩ টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতেই মতলব উত্তর উপজেলার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কার্যক্রম আরম্ভ হয়। তাদের কার্যক্রম আরম্ভ হওয়ার পূর্বে মতলব উত্তর উপজেলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে মতলব দক্ষিণ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন। তথ্য অনুসারে ৫৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৩৪ টি ঘটেছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে। অন্যগুলো হয়েছে রান্নাঘর, সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, আগুন পোহানো, সিগারেট অথবা কয়েল এবং শত্রুতার কারণে। মতলব দক্ষিণ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কার্যালয়ের স্টেশন কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, মতলব উত্তর উপজেলার স্টেশন চালু হওয়ার আগে আমরা প্রায় ২০টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছি। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত বিষয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, আমাদের রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে প্রতি শনিবার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সচেতনতামূলক প্রচার চালাচ্ছি। যেসব স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে এবং পরিদর্শন কালে যে সকল অসঙ্গতি আমাদের চোখে ধরা পড়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো নিম্নমানের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার, অনভিজ্ঞ ইলেকট্রিশিয়ান দিয়ে বাসা বাড়ির ওয়ারিং করা এবং অসাবধানতা। পাকা ভবনে বৈদ্যুতিক তারগুলো পাইপের মধ্য দিয়ে থাকে। কিন্তু কাঁচা এবং আধাপাকা বসতঘরের বৈদ্যুতিক তারগুলো অধিকাংশই খোলা অবস্থায় এবং ঝুলে থাকতেও দেখা যায়। এতে অসাবধানতার কারণে শর্ট সার্কিট হয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে চাঁদপুর (পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২)-এর মতলব জোনাল অফিসের ডিজিএম শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা যখন কোনো আবাসিক অথবা বাণিজ্যিক মিটার প্রদান করি তার আগে ওয়ারিং চেক করি। মিটার সংযোগ পাওয়ার পর অধিকাংশ সময় গ্রাহক বৈদ্যুতিক তার পরিবর্তন করে এবং অর্থ বাঁচাতে নিম্নমানের বৈদ্যুতিক সামগ্রী ব্যবহার করে। সেই সাথে বৈদ্যুতিক তারের সংযোগ স্থানে লুজ কানেকশন থাকলেও শর্ট সার্কিট হওয়ার প্রবণতা থাকে বলে তিনি মনে করেন। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে মতলব বাজারের ব্যবসায়ী হারুন শেখ বলেন, আবাসিক অথবা বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক সামগ্রীর লোড অনুপাতে বৈদ্যুতিক তার ব্যবহার না করা এবং লুজ কানেকশনের কারণে শর্ট সার্কিট হতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে বেশি হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কথা বলা হচ্ছে। এ সকল অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে অধিকতর তদন্তে জানা যাবে কেন বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হল আমাদের সকলকেই বৈদ্যুতিক সামগ্রী ব্যবহারে সচেতন হতে হবে।