মহাসড়কে নিষিদ্ধ নানা ধরনের যানবাহন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তা-ঘাটে। বিভিন্ন সড়কে অবাধে চলছে লাইসেন্সবিহীন যানবাহন। এসব যানবাহনের বেশির ভাগ চালকই অদক্ষ। এতে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে পথচারীরা। এসব যানবাহনের বেপরোয়া চলাচলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। শ্যালো ইঞ্জিন চালিত স্টিয়ারিং-নছিমন, করিমন, আলমসাধু, বালি, মাটি ও ইট টানা ট্রলি এবং লেগুনা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক নামক এসব অবৈধ যানবাহনের দেখা মেলে জেলা ও উপজেলার সর্বত্র। অবৈধ এসব যানবাহনের সরকারি কোনো অনুমোদন না থাকলেও প্রশাসনের সামনে দিয়েই এদের অবাধ চলাচল। এতে গাড়ি চলাচল বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনাও বাড়ছে, যা বন্ধ হওয়া জরুরি। কেননা অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের গতিও বাড়বে। এ ক্ষেত্রে পরিবহনের বাধাহীন চলাচল নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। অবৈধ যানবাহনের চালকরা বেশির ভাগ অপ্রাপ্তবয়স্ক ও কিশোর। তাঁদের নেই কোনো লাইসেন্স। নেই কোনো প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা। ফলে সড়ক দুর্ঘটনায় জীবন দিতে হচ্ছে কোনো না কোনো পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী অভিভাবক। অথবা হাত-পা ভেঙে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে অনেকের। এ ধরনের যানবাহনের ধারণক্ষমতার চেয়েও বেশি যাত্রী, পণ্য বা ইট, বালু, মাটি চাপিয়ে হাট-বাজারসহ নানা স্থান বেপরোয়া গতিতে চলাচল করে। ফুটপাতেও এই অবৈধ গাড়ির দখল রয়েছে। এতে যেমন বেড়েই চলেছে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা, তেমনি অদক্ষ চালকের হাতে এই বাহন যাওয়ায় সড়ক দুর্ঘটনাও বৃদ্ধি পাঁচ্ছে। পরিবহন খাতে এ মুহূর্তে সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করে প্রাণহানি কমানো। সড়ক এখন শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ অবৈধ যানবাহনের দখলে চলে গেছে। অবৈধ যানের চালকরা ট্রাফিক আইন ও সংকেত না মানার করণে বৈধ যান চালকদের নানামুখী বিপদ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। এসব বাহনের কারণে মহাসড়কে দ্রুতগতির বাস, ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না। এদিকে অবৈধ নছিমন, করিমন, আলমসাধু ও ভটভটিতে মালামাল টানার কারণে ট্রাক ও বাসের আয় রোজগার কমে এসেছে। বাসের পরিবর্তে যাত্রীরা এখন অটোভ্যান, নসিমন, আলমসাধু, ভটভটি, অটো রিক্সা, ইজিবাইক, থ্রিহুইলার ও লেগুনায় যাতায়াত করছে। তাই সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আইনের প্রয়োগ, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ চালক এবং সড়কে চলাচল উপযোগী ভালো মানের যানবাহন অবশ্যই প্রয়োজন। তবে একইসঙ্গে জনগণকেও হতে হবে সচেতন। শুধুমাত্র তাহলেই এই সড়ক পথে অবৈধ যানবাহন তুলনামূলক ভাবে কমিয়া আনা সম্ভব হবে। এ ক্ষেত্রে পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রশাসন, সরকারকে আন্তরিকতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে হবে। যদিও মাঠ পর্যায়ে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের কোনো ব্যবস্থাই চোখে পড়ছে না। প্রতিদিনই দীর্ঘ যানজটে পড়ে নাকাল হচ্ছে নগরবাসী।’