যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারা ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন পিকুলের বিরুদ্ধে নৌকায় ভোট দেয়ার অভিযোগে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ দেয়া ভিজিএফের চাল না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভুগী ঋষিপল্লির সদস্যরা জানিয়েছেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ায় স্বতন্ত্র প্রতিকে পাশ করা আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পিকুল তাদের সাথে এমন আচরণ করেছেন। এমনকি তাদের চাল দেয়ার স্লিপ দেয়া হলেও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাদের বলেছে চাল নেই। আগামী ঈদে একসাথে দুই ঈদের চাল দেয়া হবে বলেও চেয়ারম্যান জানিয়েছেন। এ ছাড়া যাদের চাল দেয়া হচ্ছে তাদের প্রতি দশ কেজিতে প্রায় দুই কেজি চাল কম দেয়া হচ্ছে বলে তারা জানান।
বুধবার সকালে উপজেলার পানিসারা ইউনিয়নের আট নম্বর ওয়ার্ড রাজাপুর গ্রামের ঋষিপল্লির সবিতা রানী, বিন্দে রানী, নিমাই চন্দ্র দাস, বিনয় দাস, নয়ন তারা, প্রভাত দাস, শান্তি দাসী, মধু বালা রানী, উত্তম দাসসহ অন্তত ২০জন ভুক্তভুগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ নিয়ে যান। পরে ঈদের ছুটিতে অফিস বন্ধ থাকায় তারা ফিরে আসেন। ঋষিপল্লির রঞ্জিত দাস বলেন, পিকুল চেয়ারম্যান আমাদের চালের কার্ড দিছিলো। সকালে চাল আনতে গেলে সে বলে তোমাদের চাল হবেনা। আমরা নৌকায় ভোট দিয়েছিলাম বলে সে আমাদের পছন্দ করেনা। তাই চাল দেয়নি। সবিতা রানী বলেন, গত বছর ঈদেও আমাদের কার্ড দিয়েছিল কিন্তু চাল দেয়নি। আজ (বুধবার) সকাল আটটার সময় কাউন্সিলে যেতে বলেছিল। যাওয়ার পরে বলেছে এবার চাল হবেনা। এই কার্ড বাড়িতে রেখে দিলে সামনের ঈদে ডাবল চাল দেবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যানকে যারা ভোট দিয়েছিল শুধু তাদের চাল দিচ্ছে। বিন্দে রানী জানান, আমরা সকালে কার্ড নিয়ে চাল আনতে গেলে চেয়ারম্যান বলেন, তোমাদের চাল দেয়া হবেনা। এ সময় আরেক ভুক্তভুগী জানান, তার শশুর পাগল দাসের নামে টিসিবির কার্ড আছে। এবার পণ্য আনতে গেলেও তাদেরকে পণ্য দেয়া হয়নি। পরিষদ থেকে বলা হয়েছে সব শেষ হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ঠ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন বলেন, পুরো ইউনিয়নে প্রায় ১৫০০ চালের স্লীপ দেয়া হয়েছে। স্লীপ দেয়া স্বত্তেও অন্তত কয়েকশ মানুষকে চাল দেয়া হয়নি। যাদের চাল দেয়া হয়েছে তারা আমাদের কাছে এসে অভিযোগ করে বলেন, সবাইকে দেড় থেকে দুই কেজি চাল কম দেয়া হচ্ছে।
পানিসারা ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন পিকুল বলেন, উপজেলা পরিষদ থেকে মোট বরাদ্বের অতিরিক্ত ২০টি স্লিপ দেয়া হয়েছিল। সেগুলো আমাকে না জানিয়ে ঋষিপাড়ায় দিয়েছিল ইউপি মেম্বর। কিন্তু তার আগেই আমার সব স্লিপ বিতরণ করা হয়েছে। এজন্য তাদের চাল দিতে পারিনি। ওজনে চাল কম দেয়ার ব্যাপারে তিনি জানান, স্লিপ ছাড়াও কিছু গরীব মানুষ চাল নিতে আসে। এজন্য অন্যান্যের কিছু চাল কম দিয়ে সমন্বয় করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল হক বলেন 'বিষয়টি সমাধানের জন্য আমি অলরেডি পিআইও সাহেবকে বলে দিয়েছি। আশা করছি সমাধান হয়ে যাবে।