রংপুরে যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্যে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। চিরাচরিত কোলাকুলি আর করমর্দনে এবার একে অপরের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছে।
শনিবার (২২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় রংপুরের ঐতিহ্যবাহী কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা হাফিজুল ইসলাম।।
ঈদের বিশেষ খুতবা শেষে দেশের মানুষের শান্তি-সমৃদ্ধি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সম্প্রীতি কামনায় মোনাজাত করা হয়। এ সময় বিশ্বজুড়ে মুসলমানের ওপর সকল প্রকার দমন, নিপীড়ন, নির্যাতন বন্ধ ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে মহান আল্লাহর কাছে অশ্রুসিক্ত প্রার্থনা করেন মুসল্লিরা।
জামাতে প্রায় ৩০ হাজার মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। এতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, বিশিষ্টজন এবং সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করেন।
নামাজ শুরুর আগে উপস্থিত মুসল্লিসহ রংপুরবাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান, রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, অতিরিক্তি জেলা (সার্বিক) প্রশাসক এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ।
এর আগে সকাল পৌনে ৮টায় রংপুর পুলিশ লাইন্স মসজিদ মাঠে, ৮টায় শাপলা চত্বর আশরাফিয়া জামে মসজিদে, মুন্সিপাড়া ঈদগাহে সকাল সাড়ে ৮টায়, হযরত মাওলানা কেরামত আলী (রহ.) মাজার সংলগ্ন কেরামতিয়া মসজিদে সকাল সাড়ে ৯টায়, মন্ডলপাড়া বড় ঈদগাহ ময়দানে সাড়ে ৯টায়, মিঠাপুকুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে ৯টায়, সকাল ১০ টায় বদরগঞ্জ চান্দামাড়ি কারামতিয়া ঈদগাহসহ বিভিন্ন ঈদগাহ, মসজিদ ও মাদ্রাসা মাঠে সুবিধাজনক সময়ে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় জামাত সকাল সাড়ে ৯টায় দামোদরপুর বড় ময়দান মাঠে এবং গঙ্গাচড়ার তালুক হাবু ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এই দুই ঈদগাহে প্রতি বছরের মতো এবারও অর্ধলাখের বেশি মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করেন।
এ ছাড়া রংপুর নগরের মহল্লা ভিত্তিক মসজিদ, মাদ্রাসা ও বিভিন্ন ঈদগাহ মাঠে সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। মহানগর ছাড়াও জেলার পীরগাছা, কাউনিয়া, মিঠাপুকুর, তারাগঞ্জ, পীরগঞ্জ, বদরগঞ্জ, রংপুর সদর ও গঙ্গাচড়া উপজেলার স্থানীয় মসজিদ ও ঈদগাহ্গুলোতে সুবিধাজনক সময়ে ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। কোথাও কোথাও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ঈদগাহের পরিবর্তে মসজিদে জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রংপুর বিভাগীয় ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্র জানিয়েছে, রংপুর জেলার প্রায় ৬ হাজার মসজিদে ঈদ জামাত আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডের ৭৫টিসহ জেলার প্রায় ১২ শতাধিক ঈদগাহ্ মাঠে ও পাড়ামহল্লার মসজিদ-মাদ্রাসাগুলোতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। কোনো কোনো মসজিদে ছিল একাধিক ঈদ জামাতের ব্যবস্থা।
ঈদ উপলেক্ষে সিটি করপোরেশন থেকে নগরীর সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও ঈদ মোবারক লেখা পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে। এ ছাড়া ঈদ আনন্দ ভাগাভাগী করতে জেলার হাসপাতাল, এতিমখানা, কারাগার ও শিশু পরিবারগুলোতে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে। বাংলাদেশ বেতার রংপুর কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী ঈদের বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে।