চিরিরবন্দরে রাস্তা পুনঃনির্মাণের দাবি, বালু মহাল ইজারা বাতিল ও ড্রাম ট্রাক চলাচল বন্ধে ধর্ম-বর্ণ, রাজনীতির ভেদাভেদ ভূলে এলাকাবাসীর ঐক্যবদ্ধভাবে কঠোর আন্দোলন উপেক্ষা করে বালুমহাল ইজারাদার বালু উত্তোলনের জন্য ড্রাম ট্রাক নিয়ে গেলে এলাকাবাসী ফিরিয়ে দেয়ার ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ইজারাদার চাঁদা দাবি ও ড্রাম চালককে মারধরের অভিযোগ এনে ওই এলাকার ১১ জনকে নামীয় ও অজ্ঞাত ১০/১৫ জনকে আসামি করে চিরিরবন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করলে গতকাল ২৫ এপ্রিল বুধবার দিনজপুর বিজ্ঞ আদালত সকলকে জামিন মঞ্জুর করেছেন। এ জামিন মঞ্জুরের কথা এলাকায় পৌঁছলে মিষ্টি বিতরণ করে এলাকাবাসি।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শি সুত্রে জানা যায়, বালুমহালের ইজারাদার এর নির্দেশে গত ১৮ এপ্রিল মঙ্গলবার সন্ধা সাড়ে ৭ টায় ৬ চাকার মিনি ড্যাম ট্রাক নিয়ে বালুমহালে বালু আনতে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী ড্রাম ট্রাক চলাচলে বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে ড্রাম ট্রাক নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে উভযের মধ্যে কথাকাটি হয় এবং ড্রাম ট্রাকটি ফিরিয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় ইজারাদার একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, এলাকাবাসীর কয়েকজন ইজারাদারের কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে না পেয়ে বালু পরিবহনে বাধা দেয়। চালক শফিকুল ইসলাম ও সঙ্গীয় সহকারিকে মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ১৪২৯ (বাং) ১ বৈশাখ হতে ইজারাদার আজমাইন কবির চিরিরবন্দর থানায় একটি মামমা দায়ের করলে থানার অফিসার ইনচার্জ দ্রুত মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে আদালতে প্রেরণ করেন। মামলা নং ২৮, ১৯-০৪-২৩ ইং।
মামলায় জামিনপ্রাপ্ত আসামি চিরিরবন্দর পূর্ব সাইতাঁড়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মকবুল হোসেন জানান, সম্পুর্ন্য মিথ্যা ও হয়রানীমূলক ভাবে এ মামলা করা হয়েছে। মামলার সাথে বাস্তবের কোন মিল নাই। ঘটনাস্থলে তিনি ছিলেননা। তারপরও তাকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এক স্বাক্ষী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সেদিনের ঘটনায় কোন মারামারি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই বা কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এলাকাবাসী শুধু ড্রাক ট্রাক চালককে ট্রাকটি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে, ওই চালক গাড়ী ঘুরিয়ে চলে যায়।
স্থানীয়রা বলেন, ২০০৪ সালে নির্মিত পাকা রাস্তা দিয়ে অবৈধ ভারী ১০ চাকার ওভার লোডেড ড্রাম ট্রাকের মাধ্যমে কয়েক বছর যাবত কাঁকড়া নদীর ফিরিঙ্গীঘাট থেকে বালু উত্তোলন করে পরিবহনের ফলে আইয়ুব সুড়ির মোড় পর্যন্ত প্রায় ৪ কি.মি. পাকা সড়ক ও গ্রামীণ রাস্তাঘাট সম্পূর্ণরুপে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে করে আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। রাস্তার ধূলোবালুতে নষ্ট হয়েছে এলাকার স্বাভাবিক পরিবেশ। প্রশাসনকে বারংবার অভিযোগ দেয়া সত্ত্বেও প্রশাসনের সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য চিরিরবন্দরের কুশলপুর বালুমহালটি জেলা প্রশাসন কতৃক ১৪২৯ (বাং) ১ বৈশাখ হতে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত ইজারার দরপত্র দেয়া হলে দিনাজপুরের কবির এন্টারপ্রাইজ দেড়কোটি টাকায় লীজ নেন।