শেরপুর সদরের মধ্য খুনুয়া গ্রামের হলু মিয়ার ছেলে উজ্জ্বল হোসেনকে (৪০) হত্যা করে দূর্বৃত্তরা তার আয়ের একমাত্র সম্বল ব্যাটারি চালিত অটোরিকশাটি নিয়ে গেছে। এতে অসহায় হয়ে পড়েছেন তার রেখে যাওয়া ৬ মেয়ে, ১ ছেলে, বৃদ্ধা মা ও স্ত্রীসহ ৯ জন। দিশেহারা এ পরিবারের পাশ্বে দাড়ালো বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, শেরপুর জেলা।
সোমবার, (১ মে) দুপুরে শেরপুর জেলা মানবাধিকার কমিশনের নেতৃবৃন্দ দুই বস্তা চাল, মশুরডাল, আলু, তেল, লবন, পেয়াজ ও নগদ অর্থ নিয়ে হাজির হন নিহত উজ্জলের খুনুয়া মধ্যপাড়ার বাড়িতে। এ সময় অসহায় এ পরিবারের সদস্যদের কান্নার রোল পড়ে ওই বাড়ীতে। সেখানে অবতারনা হয় হৃদয় বিদারক দৃশ্যের। তাদের কাান্নায় সবার চোখে নেমে আসে পানি। তারা নিহত উজ্জ্বল হোসেনের খুনিদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী করেন। পরে মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে সহায়তা তুলে দেয়া হয় এ পরিবারের সদস্যদের হাতে। এ সময় মানবাধিকার কমিশনের শেরপুর জেলার সভাপতি ও শেরপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো: মেরাজ উদ্দিন, নির্বাহী সভাপতি ও শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাবিহা জামান শাপলা, মানবাধিকার কমিশনের অপর নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান, সিনিয়র সহ-সভাপতি সাংবাদিক জুবায়ের আহমেদ, সহ-সভাপতি সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম রাজু, রনি মিয়া, সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মানিক মিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাউছার আলম সরকার ও রবিউল ইসলাম রতন, যুগ্ম-অর্থ সম্পাদক শেখ শাহরিয়ার শাকির, সাংগঠনিক সম্পাদক নাহদিুল হাসান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রকিবুল আওয়াল পাপুল, আইন বিষয়ক সম্পাদক মো: খোকন মিয়া, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মো. শামসুল হক ও নির্বাহী সদস্য রাজু আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত। এ সময় মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি মো: মেরাজ উদ্দিন বলেন, আমরা সবসময় এ অসহায় পরিবারের সাথে আছি। আইনি সহযোগিতাসহ সবধরনের সহযোগিতা আমরা করবো। একই সাথে আমরা এ জঘন্যতম হত্যাকান্ডের সাথে যারাই জড়িত তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। আমরা জানি আমাদের শেরপুরে দক্ষ পুলিশ সুপার রয়েছেন। তার নেতৃত্বে এ ঘটনার আসল দোষী ব্যক্তিদের খুজে বের করতে সক্ষম হবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। নির্বাহী সভাপতি ও শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাবিহা জামান শাপলা বলেন, আমরা এ পরিবারের মেয়েদের স্বাবলম্বী করে তুলতে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করবো। একই সাথে খুব দ্রুত একটি সেলাই মেশিন প্রদান করবো। তিনি শেরপুরের জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ পরিবারটির পাশ্বে দাড়ানোর আহ্বান জানান। অপর নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান বলেন, আমাদের কমিশনের পক্ষ থেকে আদালতে সব ধরনের আইনি সহযোগিতা করবো। আর আমাদের জেলার যোগ্য পুলিশ সুপার ও অন্যন্য কর্মকর্তাগণ এ ঘটনার দায়ী ব্যক্তিদের খুজে বের করে আইনের আওতায় আনবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।
উল্লেখ্য ২৮ এপ্রিল রাতে ভীমগঞ্জ বাজারে সবজী ও গোলআলু কিনতে এসে আর বাড়ী ফিরে যায়নি উজ্জ্বল হোসেন। পরদিন ২৯ এপ্রিল ভীমগঞ্জ-জামালপুর সড়কের পাশ্বে একটি ধান ক্ষেতে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। দূর্বৃত্তদের হাতে নিহত হওয়ার আগে সে ৫ মেয়ে ও ১ ছেলে রেখে যান। তার নিহত হওয়ার পরদিনই তার স্ত্রীর গভর্ থেকে আর এক মেয়ে সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। ফলে ওই শিশু নিয়ে তার ৬ মেয়ে, ১ ছেলে, স্ত্রী ও তার বৃদ্ধা মাসহ ৯ সদস্যের এ দরিদ্র পরিবারটি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।