খুলনা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ নিয়ন্ত্রিত দিঘলিয়া (রেলিগেট)-নগরঘাট ফেরীঘাট হতে পারাপারকারী যানবাহনের রশিদ ছাড়া জোরপূর্বক অতিরিক্ত কয়েকগুণ বেশি টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ফেরীসহ উভয়পারে টোলের তালিকা টানিয়ে রাখার নির্দেশনা থাকলেও তা মানছেন না ঘাটের ইজারাদার মোঃ ফিরোজ মোল্যা। রেলিগেট পারে চাঁদাবাজি ও ফেরীর অতিরিক্ত টোল বন্ধ এবং ইজারা বাতিলের দাবিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
এলাকাবাসীসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) নিয়ন্ত্রণাধীন দিঘলিয়া-(রেলিগেট)-আড়ুয়া-গাজীরহাট-তেরখাদা সড়কের নগরঘাট ফেরীঘাট হতে পারাপারকারী যানবাহনের টোল আদায়ের জন্য ২০২২-২০২৩, ২০২৩-২০২৪ ও ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে মেসার্স ফারদিন ষ্টোন বাজার নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা প্রদান করা হয়। যার প্রোপাইটর মোঃ ফিরোজ মোল্যা। সরেজমিনে জানা গেছে, ইজারা প্রাপ্তির পর থেকে তিনি ফেরীর পারাপারকৃত যানবাহন হতে রশিদ ছাড়া জোরপূর্বক অতিরিক্ত টোল আদায় করছেন। টোলের রশিদ চাইলে হুমকি-ধামকি দেয়া হয়। ফেরীসহ উভয়পারে টোলের তালিকা টাঙিয়ে রাখার নির্দেশনা থাকলেও তা দেখা যায়নি। সড়ক বিভাগের তালিকা অনুযায়ী বর্তমান যানবাহনের ভাড়া হেভী ট্রাক (বোঝাই/খালি) ১০০ টাকা, মিডিয়াম ট্রাক ৫০ টাকা, বড় বাস ৪৫ টাকা, মিনি ট্রাক ৩ টন পর্যন্ত লোড ধারনণ সক্ষম ৪০ টাকা, পাওয়ার ট্রিলার/ট্রাক্টর ৩০ টাকা, মাইক্রোবাস ২০ টাক, পিকআপ, প্রাইভেট, জীপ ২০ টাকা, অটোটেম্পু, সিএনজি অটোরিকশা, অটোভ্যান ব্যাটারী চালিত ৩ চাকার যান ৫ টাকা। সড়ক বিভাগের তালিকা অনুযায়ী ভাড়া নেওয়ার কথা থাকলেও সে নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইজারাদার ফিরোজ মোল্যা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ভাড়া নিচ্ছেন হেভী ট্রাক (বোঝাই/খালি) ৯০০ টাকা, মিডিয়াম ট্রাক ৫০০ টাকা, বড় বাস ১২০০ টাকা-১৫০০ টাকা। মিনি ট্রাক ৩ টন পর্যন্ত লোড ধারণ সক্ষম ৮০০ টাকা-১০০০টাকা, পাওয়ার ট্রিলার/ট্রাক্টর ৪০০ টাকা, মাইক্রোবাস ৫০০ টাকা-৭০০টাকা, পিকআপ, প্রাইভেট জীপ ৪০০ টাকা-৫০০টাকা, অটোটেম্পু, সিএনজি অটোরিকশা, অটোভ্যান ব্যাটারী চালিত তিন চাকার যান ৪০ টাকা-১০০টাকা। এভাবে অতিরিক্ত কয়েক গুণ বেশি টাকা উত্তোলন করছেন ইজারাদার। এমন অভিযোগ স্থানীয় এলাকাবাসীসহ ভুক্তভোগীদের। এদিকে নগরঘাটের রেলিগেট পাড়ে ফেরীতে পারাপারকৃত মালামালের গাড়ি থেকে সিদ্দিক মুন্সি ও দেলোয়ার জোর করে চাঁদা আদায় করছে ফেরীর ইজারাদার ফিরোজ মোল্লার নির্দেশে। ফেরীতে পারাপারকৃত মালামালের গাড়ি ও যানবাহন থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ ও ইজারা বাতিলের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা। উল্লেখ্য ফেরীর ইজারাদারের লোকেরা রশিদ ছাড়া অতিরিক্ত টোল আদায় করছে এবং রেলিগেট পাড়ে চাঁদাবাজি হচ্ছে এমন অভিযোগে দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার গত ২০ এপ্রিল ঘটনাস্থলে এসে সত্যতা পান। এ সময় তিনি ইজারাদারকে মৌখিকভাবে সর্তক করেন। ফেরীসহ উভয়পাড়ে টোলের তালিকা টানিয়ে রাখার নির্দেশনা দিলেও ইজারাদার ও চাঁদা আদায়কারীরা মানেনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এ আদেশ। উপজেলার মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় গত ২৬ এপ্রিল নগরঘাটা ফেরীতে অতিরিক্ত টোল আদায় ও রেলিগেট পাড়ে চাঁদাবাজির বিষয় উত্থাপিত হলে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মূর্শেদী নগরঘাটা ফেরীতে রশিদ ছাড়া অতিরিক্ত টোল আদায় ও রেলিগেট পারে চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। সে নির্দেশকে অমান্য করে ওই ইজারাদার সকল নিয়ম ও রীতি-নিতিকে উপেক্ষা করে কয়েকগুণ বেশী হারে জোরপূর্বক টোল আদায় অব্যাহত রেখেছেন। এক সূত্র থেকে জানা যায়, ওই ফিরোজ মোল্যা খুলনার এক প্রভাবশালী মহলের নাম ভাঙ্গিয়ে এভাবে বছরের পর বছরের বছর জুলুম ও নির্যাতন চালিয়ে আসছেন। এলাকার বিজ্ঞমহলের জিজ্ঞাসা ফিরোজ মোল্যার জন বিচ্ছিন্ন কর্মকা- পরিচালনার খুঁটির জোর কোথায়?