খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) নিয়ন্ত্রিত দিঘলিয়া (রেলিগেট - নগরঘাট) ফেরীঘাট হতে পারাপারকারী যানবাহনের অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর খুলনা বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ ইব্রাহিম হোসেনের নেতৃত্বে গত ৩০ এপ্রিল অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী পরিচালক দিনারা জামানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা, কর্মচারী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যবৃন্দ।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা একটি অটোরিকশা করে যাত্রী বেশে ফেরিঘাটে পৌছালে ঘাটের ইজারা কালেকশনকারী পারাপারের জন্য ৩০ টাকা নেয়, অটোরিকশা ভাড়া ৫ (পাঁচ) টাকার স্থলে ১৫ টাকার রশিদ দিয়ে ৩০ টাকা আদায় করে। তৎক্ষনাৎ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ইজারাদার কে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে এবং ইজারাদার অন্যায় শিকার করে জরিমানার ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করে। উল্লেখ্য, ৩/৪ চাকার মোটরাইজড যান বোঝাই/খালি, যেমন- রিক্সা, ভ্যান, সিএনজি, টেম্পো, ইজিবাইক, ব্যাটারি চালিত যে কেন যান, ইত্যাদি ফেরি পারাপারে সড়ক বিভাগ কর্তৃক ধার্য্যকৃত সরকারি ভাড়া মাত্র পাঁচ (৫) টাকা। এছাড়াও ফেরীসহ উভয় পারে টোলের তালিকা টানিয়ে রাখার আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা নেই বলে জানা যায়।
এবিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর খুলনা বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ ইব্রাহিম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, নিয়মিত মনিটরিংয়ের অংশ হিসেবে আমরা ফেরিঘাটে অভিযান পরিচালনা করি এবং সেখানে ফেরির ইজারাদার অতিরিক্ত টোল আদায় করছে তার প্রমাণ পেয়ে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করি। অভিযুক্তরা তৎক্ষনাৎ অন্যায় শিকার করে জরিমানার টাকা পরিশোধ করে এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের অন্যায় করবেনা বলে মুচলেকা দেয়। তিনি আরও জানান, ফেরিঘাটে পরবর্তীতে কোন প্রকার অনিয়ম ও অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রমাণ পাওয়া গেলে ইজারাদারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য ফেরীর ইজারাদার কর্তৃক রশিদ ছাড়া অতিরিক্ত টোল উত্তোলন এবং রেলিগেট পারে চাঁদাবাজির অভিযোগ পেয়ে গত ২০ এপ্রিল দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মাসুম বিল্লাহ ফেরিঘাটে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তিনি অতিরিক্ত টোল আদায়সহ টোল আদায়ের রশিদ না প্রদান করার সত্যতা পান। তিনি মৌখিক ভাবে ইজারাদার কে সর্তক করেন এবং ফেরীসহ উভয় পারে বড় করে টোলের তালিকা টাঙিয়ে রাখার নির্দেশনা দেন।
এছাড়াও গত ২৬ এপ্রিল উপজেলার মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় নগরঘাট ফেরীতে অতিরিক্ত টোল আদায় ও রেলিগেট পারে চাঁদাবাজির বিষয় উত্থাপিত হলে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মূর্শেদী নগরঘাট ফেরীতে রশিদ ছাড়া অতিরিক্ত টোল আদায় ও রেলিগেট পারে চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর হুশিয়ারি দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
প্রত্যক্ষ দর্শীরা এ প্রতিবেদককে জানান, স্থানীয় প্রশাসনসহ খুলনা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অভিযান পরিচালনার এবং বিভিন্ন গণ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরও সংশ্লিষ্ট ফেরিঘাট ইজারাদার বহাল তবিয়তে অতিরিক্ত টোল আদায় করে চলেছেন। এ ব্যাপারে বিজ্ঞমহলের জিজ্ঞাসা ওই ইজারাদারের খুঁটির জোর কোথায়?
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইজারাদার ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা আইন ও রীতি-নিতির তোয়াক্কা না করে, কারো কোন আদেশ নিষেধ না মেনে ইজারাদার অতিরিক্ত টোল আদায় অব্যাহত রেখেছেন। সব কিছুই চলছে ইজারাদারের খেয়ালখুশি মতো। ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে আশু কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।