ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের ফয়লা এলাকায় এক কলেজ শিক্ষার্থীকে জোর করে কপালে সিঁদুর দিতে গিয়ে স্থানীয়দের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়েছে তপন কুমার ঘোষ নামে (৫০) বছর বয়সী এক ব্যক্তি। বুধবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এরপর তপন কুমার ঘোষকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে স্থানীয়রা। এ সময় তার পকেট থেকে সিঁদুরের কৌটা উদ্ধার করা হয়েছে।
তপন কুমার ঘোষ কালীগঞ্জ উপজেলার খেদাপাড়া এলাকার গোপাল চন্দ্র ঘোষের ছেলে। তার একটি ছেলে সন্তান রয়েছে, তার ছেলে কোলাবাজার ইউনাইটেড স্কুলের ১০ম শ্রেনির ছাত্র। ভিকটিম ওই কলেজ শিক্ষার্থী শহীদ নুর আলী কলেজের একাদশ শ্রেনির ছাত্রী।
স্থানীয়রা জানায়, বুধবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে কোলা সড়ক দিয়ে শহীদ নূর আলী কলেজে যাচ্ছিল একাদশ শ্রেনির ৩ শিক্ষার্থী। এ সময় তাদের পিছু নেয় তপন কুমার ঘোষ নামের ওই ব্যক্তি। হঠাৎ ফয়লা এলাকায় পৌছালে পিছন দিক থেকে একটি মেয়েকে ঝাপটে ধরে কপালে সিঁদুর পরাতে যায় তপন। এ সময় ভিকটিম ও তার দুই বান্ধবীর চিৎকারে মাঠে কাজ করা স্থানীয়রা ছুটে আসে। স্থানীয়দের আসা দেখে দৌঁড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তপন। স্থানীয় কয়েকজন তাকে পিছু নিয়ে ধরে ফেলে। এরপর কলেজের অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরুকে বিষয়টি জানালে তিনি পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়।
ভিকটিম ওই কলেজ শিক্ষার্থীর বাবা জানান, গত ১ বছর ধরে তার কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল তপন কুমার ঘোষ। এ নিয়ে গ্রাম পর্যায়েও বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কোন সমাধান হয়নি। বুধবার মেয়ে শহীদ নূর আলী কলেজে আসছিল ক্লাস করতে। এ সময় তার মেয়েকে জোর করে কপালে সিঁদুর পরাতে যায় তপন। তিনি এ ঘটনায় বিচার চান। ভিকটিম ওই কলেজ শিক্ষার্থী জানায়, তিন বান্ধবীর সাথে সে কলেজে যাচ্ছিল। হঠাৎ তপন নামের ওই ব্যক্তি তাদের পিছু নেয়। কলেজের কাছাকাছি পৌঁছালে সে আমার কপালে সিঁদুর পরাতে যায়। এরপর বাঁধা দিলেও সে মুখে জোরপূর্বক সিঁদুর মাখায়। সে এবং তার দুই বান্ধবীর চিৎকারে আশেপাশের মানুষ এসে তাদের উদ্ধার করে। প্রায় সে আমাকে বিভিন্ন স্থানে উত্ত্যক্ত করে।
কলেজটির অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু জানান, ওই শিক্ষার্থী শহীদ নুর আলী কলেজের একাদশ শ্রেনির ছাত্রী। বিষয়টি শুনে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। বিষয়টি সভাপতিকে অবহিত করে পুলিশকে জানানো হয়। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি আবদুর রহিম মোল্লা জানান, তিনি বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে তপন কুমার ঘোষ নামের এক ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে এসেছেন। ভিকটিমের পরিবার অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।