‘আধুনিক প্রযুক্তির প্রসার সাংবাদিকতাকে অনেকখানি পাল্টে দিয়েছে। অনেকাংশে সহজও করেছে। ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে সবাই এখন প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে উঠেছে। একারণে মফস্বল সাংবাদিকতা আর আগের জায়গায় নেই। তথ্যপ্রযুক্তির সাথে পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে সাংবাদিকতার ধরণ। একই সঙ্গে সাংবাদিকতায় নানা কারণে ঝুঁকিও বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল ও জবাবদিহিতামূলক সাংবাদিকতার প্রতি গুরুত্ব বাড়াতে হবে।’
বুধবার (৩রা মে) বেলা ১টায় রংপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে রংপুর প্রেসক্লাব এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সকল প্রকার মানবাধিকারের চালিকাশক্তি’।
অনুষ্ঠানে রংপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহাবুব রহমান হাবুর সভাপতিত্বে এবং দপ্তর ও যোগাযোগ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন; প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পী, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুর রহমান মিন্টু, সিনিয়র সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন, দৈনিক দাবানলের সম্পাদক খন্দকার মোস্তফা সরওয়ার অনু, বাংলাদেশ প্রতিদিনের রংপুরের স্টাফ রিপোর্টার নজরুল মৃধা, মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার জাভেদ ইকবাল, যায়যায়দিনের রংপুর প্রতিনিধি আবেদুল হাফিজ, দাবানলের নির্বাহী সম্পাদক সুশান্ত ভৌমিক, বার্তা সম্পাদক ফরহাদুজ্জামান ফারুক, মানবকন্ঠের রংপুর প্রতিনিধি মহিউদ্দিন মখদূমী, যুগের আলোর রিপোর্টার বর্ণালী জামান, প্রথম খবরের শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের উপর চাপ সৃষ্টি, হামলা-মামলা, হুমকি-হয়রানি, নির্যাতন-নিপীড়নসহ হত্যা, খুন ও গুমের ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সকলের নিরাপত্বা নিশ্চিতে দাবি জানান। একই সাথে ডিজিটাল নিরাপত্বা আইন বাতিল করাসহ গণমাধ্যমের মতপ্রকাশের অবাধ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নেতৃবৃন্দ।
এসময় সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে গত বছরের তুলনায় এক ধাপ বাংলাদেশ পিছিয়েছে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন সাংবাদিক নেতারা। সাংবাদিকদের নিয়ে কাজ করা ফ্রান্সভিত্তিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) এর প্রকাশিত সূচকের বরাত তুলে ধরে বক্তারা বলেন, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে ১৮০টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৩তম। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা তুলনামূলক সংকুচিত। ২০২২ সালের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬২তম।
অনুষ্ঠানে প্রেসক্লাবের সদস্যরা ছাড়াও বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভার শুরুতে মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদেরসহ দেশ-বিদেশের সকল প্রয়াত সাংবাদিকদের আত্মার শান্তি কামনা করে নিরবতা পালন করা হয়।