খুলনার পাইকগাছায় ছেলে বৌকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিটে পিতার বিরুদ্ধে ছেলে আদালতে মামলা করেছেন। পাইকগাছা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ৩০ এপ্রিল উপজেলার চাঁদখালী ঢ্যামসাখালী গ্রামে মো. সরোয়ার সানা এ মামলা করেন। মামলা নং সিআর ৪৬৬/২৩। এলাকাবাসী ও বাদীর তথ্যমতে জানাযায়, পিতা শহিদুল সানা (৫৫) ও দ্বিতীয় স্ত্রী মাজেদা বেগম (৪৫) যোগসাজশে মৃত প্রথম স্ত্রীর একমাত্র ছেলে ও ছেলে বৌকে হত্যার উদ্দেশ্যে বর্বরোচিত মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এ সময় তাদের সাথে ছিলো চাচা নুর ইসলাম সানা (৪৮), নুর মোহাম্মদ সানা ও চাচাত ভাই শামীম সানা (৩০) ও শহীদ সানা (২৮)। আহত দু’জনকে এলাকাবাসী উদ্ধার করে ঐ দিন ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। রেশমা খাতুনের আঘাত গুরত্বর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে খুমেক হাসপাতালে রের্ফাড করেন। ভূক্তভোগী মহিলা রেশমার দিন মুজুর স্বামীকেও মারপিট করে। এলাকাবাসীর আরো জানান, এমনকি সরোয়ারের পৈত্রিক অধিকারসহ তার নিজ বাড়িতে ঢুকতে দিবে না দ্বিতীয় মা সহ তার পিতা। রেশমাকে স্বামী কাজের জন্য বাহিরে থাকাকালে এর আগেও মারপিট করে। মামলায় সূত্রে, বাদীর মাতা মৃতবরণ করিলে পিতা শহিদুল সানা পুন:রায় তিন সন্তানের জননী মাজেদা বেগমকে বিবাহ করেন। দ্বিতীয় বিবাহের পর হইতে প্রথম স্ত্রীর ছেলের সাথে কখনও ভালো ব্যবহার করিতেন না। সর্ব সময় বাড়ি হইতে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য কারণে অকারণে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ মারপিট করিয়া আসিতেছেন। সর্ব শেষ ২৪ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০ টায় নারিকেল পাড়াকে কেন্দ্র করে পিতা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এক ও অভিন্ন উদ্দেশ্যে ছেলের সহিত ঝগড়া শুরু করেন। ঝগড়া শুরু করলে অন্যান্য সকল সকল আসামিরা ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে সরোয়ারকে এলোপাতাড়িভাবে মারিতে থাকেন। সে চিৎকার করিতে থাকিলে স্ত্রী রেশমা দোঁড়ে আসিয়া মারপিট ঠেকাইতে গেলে আসামি নারকেলের গামলা দ্বারা মাথা বরাবর কয়েকটি বাড়ি মারে। বাড়ি মারার সঙ্গে সঙ্গে সে মাটিতে লুটাইয়া পড়ে এবং অন্যান্য সকল আসামিরা এলাপাতাড়িভাবে রেশমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রেশমার কাপড়চোপড় টানিয়া ছিড়িয়া বিবস্ত্র করত শ্লীতাহানী ঘটায়। আসামি শহীদ সানা রেশমার কানে থাকা আট আনা ওজনের স্বর্ণের দুল ও বার আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন জোরপূর্বক খুলিয়া লয়। আসামি শামীম সানা ও মাজেদা বেগম রেশমার গলা টিপিয়া ধরিয়া জিহ্বা বাহির করিয়া শ্বাস রুদ্ধ করতঃ হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় তাদের সাড়ে তিন বছরে শিশুপুত্র ওই ঘটনা দেখিয়া চিৎকার করিতে থাকিলে আসামি নুর ইসলাম সানা শিশুকে মারপিট করে। শিশুর পিতা ঠেকাইতে গেলে সকল আসামীগণ এলোপাতাড়িভাবে মারিয়া আসামি শহিদুল সানা ও নুর ইসলাম সানা গলা টিপিয়া ধরিয়া জিহ্বা বাহির করিয়া শ্বাস রুদ্ধ করতঃ হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় সরোয়ারের পকেটে থাকা পাঁচ হাজার সাত শত টাকা বাহির করিয়া নেয়। আসামি শহিদুল সানার হুকুমে অন্যান্য সকল আসামীগণ বাদির বসত ঘরে অনাধিকার প্রবেশ করিয়া বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র ভাংচুর করিয়া পঞ্চাশ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। ঘটনার পর রেশমা খাতুনের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু পরবর্তিতে অবস্থা খুবই খারাপ হওয়ায় চিকিৎসকগণ উন্নত চিকিৎসার জন্য খুমেক হাসপাতালে রেফার্ড করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পাইকগাছা থানা পুলিশকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার বাদী সরোয়ার জানান, ভয়ে বাড়ি যেতে পারছেন না। স্ত্রী ও শিশুপুত্র নিয়ে রিকশা চালক সরোয়ার পথে পথে ঘুরছেন।