তিল চাষে সফল চাঁদপুর মতলব উত্তরের কৃষকরা 

এফএনএস (মিজানুর রহমান; চাঁদপুর) : : | প্রকাশ: ৪ মে, ২০২৩, ০৩:৩০ এএম

ভোজ্যতেল হিসেবে চাহিদা বাড়ার কারণে অল্প শ্রমে ও কম খরচে সব ধরনের মাটিতে উৎপাদন হওয়ায় তিল চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাঁদপুরের মতলব উত্তরের কৃষকদের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে যাবে তিল চাষিদের ভাগ্য। তিল চাষিরা তিল চাষে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। ৩০ এপ্রিল সোমবার মতলব উত্তরের বিভিন্ন স্থানে সরেজমিনে মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম  ঘুরে  দেখা যায়, আমন আবাদের পর ক্ষেত যখন খালি থাকে, তখন তিল চাষ করা যায়। তিল চাষে সার ও কীটনাশক লাগে না বললেই চলে। গরু-ছাগলে তিল খায় না তাই রক্ষণাবেক্ষণে কোনো খরচ হয় না।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়,কম খরচে উৎপাদন করে বাজারে ভালো দামে বিক্রি করতে পেরে তিল চাষে কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে। এ ছাড়া ভোজ্য তেল হিসেবেও তিলের চাহিদা বাড়ায় কৃষকরাও চাষাবাদ আগ্রহী উঠেন। এ বছর মতলব উত্তর উপজেলায় প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে তিল চাষ করা হয়েছে। চলিত মৌসুমে বীজ সহায়তা হিসেবে কৃষকের মধ্যে তিলের বীজ প্রদান করা হয়। তিলের ব্যবহার এবং তিল থেকে উৎপাদিত তেল আমাদের স্বাস্থ্যসম্মত। এ বিষয়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। খরচ কম আর আর্থিকভাবে লাভবান হতে তিল চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাটির জৈব ঘাটতি পূরণেও লাভজনক হওয়ায় তিল চাষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাজার ব্যবস্থাপনা সুবিধা পেলে এ উপজেলার কৃষিতে নতুন সম্ভবনা হতে পারে তিল। কিন্তু মাঝে তিল চাষ অনেকটা হারিয়ে গিয়েছিল। গত কয়েক বছর ধরে ফের তিল চাষ বাড়ছে। উপজেলার জহিরাবাদ ইউনিয়নের নাওভাঙ্গা জয়পুর গ্রামের  তিল চাষি আবদুল মতিন মল্লিক বলেন, তিনি ৩ বছর ধরে তিল চাষ করছেন। এবার করেছেন ২ বিঘা জমিতে। তার দেখা দেখি ওই গ্রামের অনেকে তিল চাষ করছেন। তিল চাষে জমির উর্বরা শক্তি বাড়ে। রাসায়নিক সার ও জমি নিড়ানির দরকার হয় না। সামান্য শ্রম ও অল্প খরচে প্রতি বিঘায় ৫ থেকে ৬ মণ ফলন মেলে। তিনি বলেন, আলুর জমিতে তেমন চাষের প্রয়োজন হয় না। জমি সমান করে তিলের বীজ ছিটালেই চলে। প্রতি বিঘায় প্রয়োজন ২ কেজি বীজ। সেচ, সার, নিড়ানি ছাড়াই তিন মাসের মধ্যে তিল ওঠে। তিলে কোনো রোগবালাই না হওয়ায় কীটনাশকের দরকার হয় না। ১ বিঘা জমিতে তিল চাষ করে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা লাভ করা যায়। 
মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন বলেন, তিল চাষ আরও বৃদ্ধি পেলে উপজেলার ভোজ্য তেলে চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। তাছাড়া তিল গাছ শেকড়ের মাধ্যমে মাটিতে নাইট্রোজেন সংযোজিত করে। এ ছাড়া তিলের পাতা জমিতে জৈব পদার্থ সংযোজিত করে। এভাবে তিল গাছ জমির উর্বরা শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW