দাকোপে ভাইয়ের বিরুদ্ধে করা সংবাদ সম্মেলনের ২ দিনের মাথায় এবার পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইমদাদুল হক। মাসহ পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে অবৈধ অর্থের লোভে বেপরোয়া হয়ে আজিজুল হক এমন অপপ্রচারে মেতে উঠেছে বলে দাবী করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় দাকোপ প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতায় চালনা পৌরসভার নিকাহ রেজিষ্টার (কাজী) আলহাজ¦ জি এম ইমদাদুল হক পূর্বে তার বিরুদ্ধে করা সকল অভিযোগ মিথ্যা ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক দাবী করে বলেন, মানুষরুপী অর্থলোভী আমার ভাই আজিজুল আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে প্রতিহিংসার বশে শতভাগ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে এমন অপপ্রচারে মাঠে নেমেছে। তিনি বলেন খুলনা জেলা রেজিষ্টারের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী নির্দেশ বা স্থায়ী নিকাহ রেজিষ্টার নিয়োগের আগ পর্যন্ত অতিরিক্ত হিসাবে আমি সুতারখালী ইউনিয়নে অর্পিত দায়িত্ব করছি। দূরবর্তী এলাকা হওয়ায় সেখানে পূর্বে যেভাবে আজিজুল হক আমার সহায়তাকারী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছে এখন তার পরিবর্তে অন্যরা অনুরুপ সহায়তাকারী হিসাবে কাজ করছে। তিনি বলেন দীর্ঘ সময় সে যখন কাজ করেছিলো সেটা যদি বৈধ হয় তাহলে তারস্থলে অন্যান্যের একই কাজের সুযোগ দিলে সেটা অবৈধ হল কিভাবে ? সে আমার নিকট কোন ডিও লেটার বা প্রয়োজনীয় কোন কাগজপত্র জমা রাখেনি। জাল জালিয়াতিতে পারদর্শী আজিজুল হকের দেখানো ফটোকপিটির উৎস্য এবং এর আসল কপি আছে কিনা তার উত্তর সে দিতে পারবে। গত ৩০/০৬/২০১৯ তারিখ ক্যাশ খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে আমার গ্রহন করা ২০ হাজার টাকা বিবাহ রেজিষ্টির জন্য তার কাছে থাকা আমার হিসাবের টাকা। তাহলে সে কিভাবে আমাকে টাকা দিয়েছে ? তার ভাষ্য অনুযায়ী ১৫ এবং ২৩ নং বইয়ের কোথাও বাল্য বিবাহ বা বেআইনী কোন কাজের প্রমান দেখাতে পারবেনা। এ বিষয়ে আমি যে কোন তদন্তে সহায়তা করতে শতভাগ প্রস্তুত আছি। এ ছাড়া বীমার টাকা বা এতিমখানা সংক্রান্ত যে সকল অভিযোগ করেছেন এখানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত আছেন। আপনারা তাদের মুখ থেকেই জানতে পারবেন। এতিমখানার বাজার, আদায়ের টাকা এবং বালি বিক্রির টাকা নিয়ে বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমার আত্মীয় নুরনবীকে চাকুরীচ্যুত করা হয়। এমন জঘন্য অপরাধে তাকে সহায়তা না করায় নুরনবী আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে পরোক্ষভাবে আমার ভাইয়ের এ সকল ঘৃন্য কাজে সহায়তা করছে। উপজেলার হিন্দু বিবাহের সাথে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। হিন্দু রেজিষ্টার আমার ঘরের দ্বিতীয় তলা ভাড়া নিয়ে পৃথক ভাবে নিজ দায়িত্ব পালন করছেন।
আমার বিরুদ্ধে তার এমন আক্রোশের কারণ হল সহযোগী হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে সে বাল্য বিয়ে পড়ানো, ইচ্ছেমত অবৈধভাবে হাজার হাজার টাকা নেওয়াসহ সকল অপকর্ম করতে থাকে। আমি এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে তাকে বার বার অনুরোধ করি। কিন্তু সে আমার কথা না শুনে এমন বেআইনী কাজ অব্যহত রাখে। নিরুপায় হয়ে আমি তার সহযোগীতা নেওয়া ছেড়ে দেই। একই সাথে তার কাছে থাকা আমার মূল রেজিষ্টারসহ অন্যান্য কাগজপত্র ফেরত চাওয়ায় সে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। প্রকাশ্যে নলিয়ান বাজারে আমার সাইনবোর্ড ভাংচুর করে। এবং আমার রেজিষ্টার ফেরত দিতে অস্বীকার করে। সরকারী রেজিষ্টার উর্দ্ধার এবং নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে আমি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হই। একদিকে অবৈধ আয়ের উৎস্য বন্দ অন্যদিকে তার কু-কীর্তি প্রকাশ পাওয়ায় সে প্রতিশোধ পরায়নে মরিয়া হয়ে আমার সম্মান হানী করতে এমন জঘন্য মিথ্যাচার করেছে। সে অর্থ এবং স্বার্থের লোভে নিজের মায়ের সাথে দূর্ব্যবহার করেছে। ভাইদের সম্পত্তি অবৈধভাবে ভোগ দখল করেছে। যে কারণে আমার পরিবারের সকল সদস্য তাকে ঘৃনা করে। তার প্রমান সেদিন শত চেষ্টা করেও আমার বিরুদ্ধে করা সংবাদ সম্মেলনে কাউকে উপস্থিত করতে পারেনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত তাদের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, আজিজুল সব সময় আমাকে অন্য সন্তানদের থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করে। সে যাতে ভাইদের বিরুদ্ধে এমন কাজ না করে সে জন্য মা হয়ে আমি আজিজুলের পা পর্যন্ত ধরেছি কিন্তু কোন কাজ হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত তাদের অপর ২ ভাই ফেরদাউস গাজী এবং আনোয়ারুল হক গাজী ইমদাদুলের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র দাবী করে বলেন বরং আজিজুল আমাদের যৌথ সম্পদ অবৈধভাগে ভোগ দখলের চেষ্টায় মরিয়া। এ ছাড়া বীমার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনার বিষয়ে উপস্থিত নলিয়ান গ্রামের জবেদা বেগম অভিযোগটি মিথ্যা দাবী করে বলেন অন্যান্যের কাছে জমা দেওয়া বীমার টাকা ইমদাদুলের সহায়তায় আমি ফিরে পেয়েছি। উপস্থিত এলাকার শাহিন গাজী বলেন আমার প্রতিবেশী ছকিম গাজীর মেয়ের বিয়ের সময় আজিজুল অবৈধভাবে সাড়ে ৪ হাজার টাকা নেয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মোল্যা মেহেদী হাসান এতিম খানার সভাপতি জাহাঙ্গীর মোল্যা পূর্বে এতিমখানা সংক্রান্ত বিষয়ে আজিজুল হকের অভিযোগ মিথ্যা দাবী করে বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক তার এমন মিথ্যাচার বন্দ করে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় আমরা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে বাধ্য হব। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে সুতারখালী ইউনিয়নের রফিকুল ইসলাম, মহাসিন মোল্যা, সাইদুল সানা, বকুল মল্লিক এবং মোল্যা মেহেদী হাসান এতিমখানার সহসভাপতি আলহাজ¦ হালিম গাজী, সদস্য নাসির উদ্দিন শেখ, মাওলানা গোলাম মোস্তফা, হাসান গাজী উপস্থিত ছিলেন।