সারা দেশের ন্যায় যশোরের ঝিকরগাছায় নিত্য পণ্যের বাজারে হু হু করে দাম বাড়ছে। নেই বাজার তদারকির ব্যবস্থা। প্রশাসনের নির্বিকারের কারণে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি একমাত্র কারণ বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতা সাধারণ।
সারা দেশের ন্যায় যশোরের ঝিকরগাছা বাজারে নিত্য পণ্য দ্রব্যের দাম হু হু করে অস্বাভাবিক গতিতে বেড়েই চলেছে।
রোববার সকালে সরজমিনে জানা গেল - কাঁচা বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে তরকারির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। কেজি দরে পটল ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা, কাঁচকলা ২০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা, কুমড়া ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা, কাঁচা ঝাল ১২০ টাকা থেকে কমে ৮০ টাকা এসেছে, রসুন ৯০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা, পিয়াজ ৩০ টাকা থেকে ৫৫ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা থেকে কমে ৫৫ টাকা, টমেটো ২০ টাকা থেকে বেড়ে ২৫ টাকা, বেগুন ১৮ টাকা থেকে বেড়ে ৩৫ টাকা, বরবটি ৩০ থেকে বেড়ে ৪০ টাকা, শুকনা ঝাল ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা, সজিনার ডাটা ৯০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা, আদা ১৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা, আলু ২৫ টাকা থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা ক্রেতা ইমামুল হক রঞ্জু জানান, তরকারির দাম এত বাড়ার কারণে, তরকারি কম কিনে ঝোল বাড়িয়ে দিয়েছি, ঝোল দিয়ে ভাত খাওয়া সারতে হয়।
কাঁচামালের পাইকারি ব্যবসায়ী মেম্বার আইয়ুব হোসেন জানান, তরি তরকারি আমদানি উপরে নির্ভর করে দাম ওঠানামা। গত কয়েক দিনের ব্যবধানে কিছু তরকারির দাম বাড়লেও আবার কিছু তরকারির দাম কমেছেও।
মুদি দোকানও বেড়েছে জিনিসপত্রের দাম। মা ডিপার্টমেন্টের স্বত্বাধিকার জানান, প্রতি কেজি দরে জিরা সাড়ে ৬০০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০০ টাকা, চিনি ১১০ টাকা থেকে বেড়ে ১৪০ টাকা, মসুর ডাল ১১০ টাকা থেকে বেড়ে ১৩০ টাকা, মুগ ডাল ১০০ টাকা থেকে বেরিয়ে ১৩০ টাকা, সয়াবিন তেল ১৯০ টাকা থেকে ২১০ টাকা, এলাচ ১২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা, লবঙ্গ ১২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা, ডিম ১০ টাকা থেকে বেড়ে ১৩ টাকা, ডিটারজেন্ট পাউডার প্রতি কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। বিভিন্ন ধরনের গায়ে মাখা সাবান প্রতিটিতে বেড়েছে ১৫ থেকে ২৫ টাকা। পোলাওয়ের চাল ১৩০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা। বিভিন্ন ধরনের শিশু খাদ্যের দাম প্রতি প্যাকেটে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে।
শিশু খাদ্য ল্যাকটোজেন ক্রেতা নাসরিন সুলতানা জানান, আমি ভয় পাচ্ছি শুধু আমার শিশুই নয়, শিশুখাদ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে অধিকাংশ শিশুরাই পুষ্টি হীনতায় আক্রান্ত হবে। এসব দেখার কেউ নেই।
মাংসের বাজারেও রয়েছে বেশ উত্তাপ। মুরগি ব্যবসায়ী ওলিয়ার রহমান জানান, প্রতি কেজি দেশি মুরগির ৬৫০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ২৮০ টাকা থেকে কমে ২৪০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩৮০ টাকা থেকে কমে ৩৫০ টাকা, প্যারিস মুরগি ৪০০ টাকা থেকে কমে ৩৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
সোনালি মুরগি ক্রেতা শহিদুল ইসলাম জানান, কয়দিন আগে ২২০ টাকার সোনালি মুরগি এখন ৩৫০ টাকায় কিনছি। মুরগি বিক্রেতারা দাম কমার কথা বললে আমি সেটা মানতে নারাজ।
কাটা মুরগি বিক্রেতা হাফিজুর রহমান জানান, প্রতি কেজি প্যারিস মুরগি ৪৮০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ৩৪০ টাকা থেকে কমে ৩০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে গরুর মাংস ৭০০ টাকা থেকে বেড়ে ৭৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা।
এদিকে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আরেক ধরনের অস্বস্তিতে ভুগছেন সাধারণ মানুষ। বর্তমানে ঝিকরগাছা বাজারে ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকায় বিভিন্ন ধরনের এলপি গ্যাস বিক্রি হচ্ছে। এলপি গ্যাস বিক্রেতা রাশেদুল মোমিন সুজন জানান, সরকারিভাবে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে আমরা কোম্পানি ভেদে ১২৫০ থেকে ১৩৫০ টাকায় বিক্রি করছি।
সাধারণ ক্রেতা এমদাদুল হক জানান, দায়সারা গোছের বাজার নিয়ন্ত্রণের অভিযান চালানো হয়। যার কারণে সরকার মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না।
রোববার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুবুল হক জানান, আমরা প্রতিনিয়ত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি, এবং ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তাগণ বাজার নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করে আসছেন।