ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ফয়সাল হত্যা মামলায় মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে অন্যায়ভাবে আসামি করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান মো. ছায়েদ হোসেন। সোমবার সকালে সরাইল প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব খানের সঞ্চালনায় ও সভাপতি মো. আইয়ুব খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছায়েদ হোসেন। লিখিত বক্তব্যে ছায়েদ হোসেন বানোয়াট মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানিয়ে বলেন, আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত একজন জনপ্রতিনিধি। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১৪ এপ্রিল শুক্রবার রাতে কালীকচ্ছ বাজারের সংঘর্ষ শুরূ হয়। মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য আমি সংঘর্ষ থামানোর চেষ্টা করি। আমার সাথে ছিল আওয়ামী লীগ নেতা শফিক। উভয় পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় একটি মার্কেটেও আশ্রয় নিয়েছি। মিনিট দশেক পরই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তখন সূর্যকান্দি এলাকার লোকজন অনেক দক্ষিণে চলে আসে। কদমতলি এলাকার লোকজন উত্তর দিকে অবস্থান করে। উত্তর দিক থেকে পুলিশের দিকে কয়েকটি ঢিল আসে। তখন পুলিশ অনেকটা ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে। তখনই গুলির শব্দ শুনতে পায়। দৌঁড়ে গিয়ে পুলিশ যাকে সামনে পেয়েছে তাকেই আটক করেছে। কিছুক্ষণ পর খবর পায় ফয়সাল নামের এক তরূন নিহত হয়েছে। ছবিতে দেখতে পেয়েছি নিহত ফয়সালের বুকে একাধিক গুলির চিহ্ন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে উভয় পক্ষের ৪৪৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। পরবর্তীতে নিহতের চাচা বাদী হয়ে আমাকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর দশ দিন পর নিহতের পিতা বাদী হয়ে আমাকে প্রধান আসামি করে আরেকটি হত্যা মামলা করেন। অথচ এই হত্যা সম্পর্কে আমার কিছুই জানা নেই। এটি হীন উদ্যেশ্যে আমার ব্যক্তিগত সুনাম ক্ষুন্ন করে আর্থিক ও মানসিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে মহল বিশেষের গভীর ষড়যন্ত্র। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ফয়সাল হত্যাকান্ডের সঠিক তথ্য উৎঘাটন করে নিরীহ নিরপরাধ লোকদের মামলা থেকে প্রত্যাহারের জোর দাবী জানাচ্ছি। সেই সাথে কালীকচ্ছ বাজারে ওই রাতে ঘটে যাওয়া বিষয়ের উপর অনুসন্ধানমূলক বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে মূল ঘটনাকে জাতীর সামনে তুলে ধরতে গণমাধ্যম কর্মীদের অনুরোধ করছি। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, সংঘর্ষের শুরূতে কোন ধরণের শব্দ শুনিনি। কারো কাছে কোন ধরণের অস্ত্রও দেখিনি। পুলিশ পৌঁছার পরই গুলির শব্দ শুনতে পেয়েছি। টিয়ারসেলের ধূঁয়া দেখেছি। তখন দক্ষিণ দিকে কোন লোকই ছিল না। জিহাদকে আমি দেখিনি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম, কালীকচ্ছ ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য জায়েদা বেগম, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান-১ মো. ধন মিয়া ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ছাদেক মিয়া। মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে গতকাল একই সময়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচির সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিলেন চেয়ারম্যান ছায়েদ হোসেন। বিভিন্ন মহলের চাপে মানববন্ধন কর্মসূচিটি পালন করতে না পারার বিষয়টি চাউর হচ্ছে অফিস পাড়ায়।