বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতি একশ’টি মৃত্যুর মধ্যে ৬৭ জনের মৃত্যু হয় বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ ও রোগের জটিলতা থেকে। অসংক্রামক রোগ সমূহের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ ও উচ্চ রক্তচাপজনিত হৃদরোগ ও স্ট্রোক (পক্ষাঘাত) ও ডায়াবেটিকের কারণে সর্বাধিক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। তাই অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসার জন্য সরকার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রনাধীন স্বতন্ত্র “অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রন লাইন ডাইরেক্টরেট” প্রতিষ্ঠা করেছে।
বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে উদ্যোগ নিয়ে বরিশালে স্বাস্থসেবা প্রদানকারীদের জন্য প্রশিক্ষন কর্মশালায় বক্তারা এসব তথ্য তুলে ধরেছেন। বরিশাল জেলার নয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপকসহ অন্যান্য সেবাদানকারীদের জন্য ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে গত ৭ মে থেকে ৯ মে পর্যন্ত তিনদিন ব্যাপী এ প্রশিক্ষন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালার উদ্বোধণ করেন বরিশালের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হুমায়ুন শাহীন খান। বাংলাদেশ হাইপারটেনশন কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভের ডেপুটি প্রোগ্রাম ডাইরেক্টর ডা. মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া এবং প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. শামীম জুবারের সঞ্চালনায় প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য উপপরিচালক ডা. শ্যমল কৃষ্ণ মন্ডল, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের এপিডেমিওলজি, রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও বাংলাদেশ হাইপারটেনশন কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।
মঙ্গলবার দুপুরে সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, সরকারি তথ্য অনুযায়ী শহর ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মাঝে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিকের প্রাদুর্ভাব প্রায় সমান হলেও, গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মাঝে এ-সংক্রান্ত সচেতনতা কিংবা বিভিন্ন সেবা কেন্দ্র থেকে সেবাপ্রাপ্তির সুবিধা অত্যন্ত সীমিত। এ বাস্তবতাকে মাথায় রেখে ‘অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রন লাইন ডাইরেক্টরেট’ ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সহযোগিতায় “বাংলাদেশ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন কর্মসূচী” শীর্ষক একটি প্রকল্প ২০১৯ সাল থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে। এ প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’এ একটি অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রন কক্ষ স্থাপন এবং উন্নত ও কার্যকর সেবা প্রদানের জন্য সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে ওই কক্ষ সজ্জিত করা। সেবা কেন্দ্রে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য সেবাদানকারীদের উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাকরণ ও সেবাকেন্দ্রে আগত রোগীদের ডিজিটাল পদ্ধতিতে রেজিস্ট্রেশন ও আধুনিক রিপোর্টিং পদ্ধতি চালুকরণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। এরমধ্য দিয়ে অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও পরিচর্যায় সরকারি প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র সমূহের সক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে।