আগামী ১২ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর প্রচার-প্রচারনায় সহযোগিতা করার জন্য ৩১ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি গঠন করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার আলোচিত মেয়র প্রার্থী বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত।
এ উপলক্ষে সোমবার দিবাগত রাতে নৌকার প্রার্থী তার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা কমিটির নাম ঘোষনা করেন। এর আগে তিনি ঢাকা থেকে আগত শ্রমিক লীগের নেতৃবৃন্দকে স্বাগত জানিয়েছেন। মেয়র প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বরিশালবাসী যেন নির্বিঘেœ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, নগরবাসী উন্নয়নে বিশ্বাসী। তাই তারা আসন্ন সিটি নির্বাচনে উন্নয়নের প্রতীক নৌকা মার্কাকেই বেঁছে নিবেন বলে আমি শতভাগ বিশ্বাস করছি। আমি মেয়র নির্বাচিত হলে সকলের মতামতের উপর ভিত্তি করে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগীতায় উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা নতুন একটি বরিশাল গড়বো।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আজম খসরুসহ ঢাকা থেকে আগত নেতৃবৃন্দ ছাড়াও মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান মামুনসহ নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতের নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা আরো গতিশীল করতে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট গঠণ করা উপদেষ্টা পরিষদের নাম ঘোষণা করা হয়। উপদেষ্টারা হচ্ছেন-প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতের বড়ভাই আলহাজ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, জাহিদ ফারুক শামীম এমপি, অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস, মাহাবুব উদ্দিন আহেম্মদ বীর বিক্রম, অ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল, জেবুন্নেসা আফরোজ, অ্যাডভোকেট শেখ মো. টিপু সুলতান, খান আলতাফ হোসেন ভুলু, অ্যাডভোকেট মানবেন্দ্র বটব্যাল, প্রফেসর মুহাম্মদ জিয়াউল হক, ড. মো. আবদুল কাইয়ুম, মো. হোসেন চৌধুরী, সৈয়দ আনিছুর রহমান, আমিনুল ইসলাম তোতা, নজরুল হক নিলু, অ্যাডভোকেট আবদুল হাই মাহাবুব, সাইদুর রহমান রিন্টু, অ্যাডভোকেট ফয়জুল হক ফয়েজ, জিএম কবির ভুলু, অ্যাডভোকেট দিলিপ ঘোষ, রাবেয়া খাতুন, অধ্যাপক শাহ সাজেদা, পুস্প চক্রবর্তী, ডা. পিযুষ কান্তি দাস, ডা. ইসতিয়াক আহম্মেদ, মফিজুল ইসলাম কামাল, নজমুল হোসেন আকাশ, মশিউর রহমান, আজমল হোসেন লাবু ও শুভঙ্কর চক্রবর্তী। এর আগে নৌকার প্রার্থী তার নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠণ করেছেন। যা বলবৎ থাকবে জানিয়ে খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, ৩১ সদস্য বিশিষ্ট এই উপদেষ্টা কমিটি আমার নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়ে পরামর্শ দেবেন। সে অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা কমিটি কাজ করবেন।
উপদেষ্টা কমিটিতেও নেই সাদিক ॥ গত ৩০ এপ্রিল ১৬ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচনী পরিচালনা কমিটি গঠণের পর সোমবার দিবাগত রাতে নৌকার প্রার্থীর ঘোষিত ৩১ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটিতেও রাখা হয়নি বর্তমান মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে। এমনকি মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেনকেও কোন কমিটিতে রাখা হয়নি। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে খোকন সেরনিয়াবাত বলেছেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সাধারণ সম্পাদক বর্তমানে মেয়র পদে রয়েছেন। তাই তাদের কমিটিতে রাখা হয়নি।
হাতপাখার প্রার্থীকে ইসির তলব ॥ মনোনয়ন পাওয়ার পর প্রথমবারই মোটরসাইকেল শোডাউন নিয়ে নগরীতে এসে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা মার্কার মেয়র প্রার্থী মুফতি মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। এজন্য তাকে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে তলব করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় বরিশাল সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে স্ব-শরীরে হাজির হয়ে লিখিত ও মৌখিকভাবে হাতপাখার প্রার্থীকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। সোমবার রাতে বরিশাল সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরের স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি মেয়র প্রার্থী ফয়জুল করীমকে পাঠানো হয়েছে।
লাঙ্গলের প্রার্থীর অভিযোগ ॥ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও সিটি নির্বাচনে জাপা মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপস অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মেয়র প্রার্থী দুইজনেই নির্বাচনী এলাকায় শো-ডাউন ও মহড়া প্রদানের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর কোন মন্ত্রী কিংবা প্রতিমন্ত্রী নির্বাচনী কোন প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারেন না। অথচ নৌকার প্রার্থীর জন্য নামে-বেনামে বিভিন্ন সভা ও সমাবেশে ভোট চাচ্ছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম এমপি। তাপস আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন গণমাধ্যমে এসব দেখেও প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।