যশোরের মণিরামপুরের শ্যামকুড় গ্রাম এখন মাটি ও বালু খেকোদের শকুনি নজর পড়েছে। স্থানীয় শ্যামকুড় ইউনিয়নের কতিপয়ের নিয়ন্ত্রনে চলছে মাটি ও বালু উত্তোলণের মহোৎসব। গ্রামটির মধ্যে দিয়ে প্রতিদিন অর্ধশত মাটিবাহী ট্রাক্টর ও ট্রলি চলাচলে একদিকে গ্রাম্য রাস্তার ক্ষতি হচ্ছে অপরদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগামী কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে। এ ছাড়া গৃহপালিত হাঁস, ছাগল ট্রাক্টরের চাকায় মারা যাচ্ছে। প্রতিকারে রাস্তায় নেমেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকবৃন্দ।
বুধবার সকালে উপজেলার লঅউড়ী-রামনগর কামিল (এমএ) মাদ্রাসা সংলগ্ন রাস্তায় মানববন্ধন করে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকবৃন্দ। এ সময় মাদ্রাসার ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ গ্রামবাসী মানবন্ধন করে প্রতিবাদ জানায়। মানববন্ধনে উপস্থিত শিক্ষকসহ গ্রামবাসী বলেন, অবিলম্বে রাস্তার উপর দিয়ে মাটিবাহী ট্রাক্টর ও ট্রলি চলাচল বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় পরবর্তিতে কঠোর কর্মসূচি গ্রহন করা হবে। তারা আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানগামী শিক্ষার্থীরা মাটিবাহী ট্রাক্টর ও ট্রলিতে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
এতে বক্তব্য রাখেন মাদ্রাসা অধ্যক্ষ কেএম মুফিজুর রহমান, অভিভাবক সদস্য মঈন উদ্দীন, শিক্ষক মিজানুর রহমান, ইউপি সদস্য ওয়াহিদ মুরাদ সাগর, প্রভাষক আমিরুল ইসলাম, এনামুল হক প্রমূখ।
জানাযায়, মাটিবাহী যানবাহনের কবলে পড়ে গত ৩মে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন মাদ্রাসা পড়-য়া ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুনজিলিস (১৩), তৃতীয় শ্রেণিতে পড়-য়া হুসাইন হোসেন। শ্যামকুড় গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, তার একটি ছাগলসহ ৪টি ছাগল, ৫০টি রাজহাঁস এবং অগণিত পাতিহাঁস মাটিবাহী এসব যানবাহন চাপায় মারা গেছে। মঞ্জুর হোসেনের বাড়ির প্রাচীর ভেঙ্গে মাটিবাহী যানবাহন ঢুকে বাড়ির ক্ষতিসাধন হয়।
স্থানীয়রা জানায়, স্থানীয় শ্যামকুড় ইউনিয়নের কতিপয় লোকের নিয়ন্ত্রনে চলছে মাটি ও বালু উত্তোলণের মহোৎসব। শ্যামকুড় ইউনিয়নের ফজলুর রহমান, হাজি রফিকুল ইসলাম ওরফে হাজী রফিক, শহিদুল ইসলাম মন্টু, যুবলীগ নেতা সাইফুল্লাহ, আসাদুজ্জামান, তরিকুল ইসলাম, আবদুল হাকি, শৈবাল, আবুল কালাম, মহিদুল ইসলাম, রাজুর নেতৃত্বে গ্রামের অন্তত ১০/১২টি জায়গা হতে প্রতিদিন প্রায় অর্ধশত মাটিবাহী ট্রাক্টর ও ট্রলি চলাচল করছে। ভয়ে গ্রামের সাধারন লোকজন টু-শব্দ করতে পারছেন না।
প্রতিকারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গ্রামবাসীর গণস্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ দিলেও কাজ হয়নি।
জানতে চাইলে ফজলুর রহমান বলেন, আমি তো একা মাটি দিচ্ছি না, আমি এবছর নতুন শুরু করেছি। আমি ছাড়াও অনেক আগে থেকে মহিদুল, শৈবাল, হাজী রফিক, তরিকুল, আসাদ, রফিকুল, মন্টু মাটি দিয়ে আসছে। কিন্তু দায় আমার উপর পড়ছে।
স্থানীয় শ্যামকুড় ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন বলেন, মাটি উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।