অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পরে ব্যবসায়ী বাবার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরেও বৃহস্পতিবার সকালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে ছেলে। অপর এক ব্যবসায়ীর এখনো জ্ঞান ফেরেনি। খবর পেয়ে থানা পুলিশ হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার দিবাগত রাতে বরিশাল থেকে আগৈলঝাড়াগামী লোকাল বাসে।
আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাজহারুল ইসলাম জানান, বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার গৈলা গ্রামের মৃত রাম প্রসাদ সমদ্দারের ছেলে গৈলা বাজারের মাছ ব্যবসায়ী সুনীল সমদ্দার (৫২) বরিশাল থেকে এক লাখ ষাট হাজার টাকার ইলিশ মাছ কিনে পয়সারহাটগামী লোকাল বাসে বাড়ি ফিরছিলেন। ওই গাড়িতেই তিনি অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পরে জ্ঞান হারানোর পর দুর্বৃত্তরা সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যায়।
অপরদিকে একইদিন পূর্ব সুজনকাঠি গ্রামের মৃত আবদুল রশিদের ছেলে গৈলা বাজারের সুপারি ব্যবসায়ী সৈয়দ সরোয়ার হোসেন (৪৫) গৌরনদীর মাহিলাড়া থেকে সুপারী কিনে পয়সারহাটগামী ওই লোকাল বাসে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনিও একই গাড়িতে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পরেন। অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা তাদের দুইজনকে চেতনা নাশক স্প্রে করে সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যায়।
সূত্রমতে, লোকাল বাসটি গৈলার রথখোলা বাসষ্ট্যান্ডে পৌঁছার পর অচেতন অবস্থায় স্থানীয়রা ওই দুই ব্যবসায়ীকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। রাতেই মাছ ব্যবসায়ী সুনীল সমদ্দারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য তালুকদার মো. মনিরুজ্জামান জানান, মাছ ব্যবসায়ী সুনীল সমদ্দারের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ইউপি সদস্য বলেন, পিতার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরেও স্থানীয়দের অনুরোধে তার ছোট ছেলে উজ্জ্বল সমদ্দার চলতি এসএসসি পরীক্ষায় সরকারি গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার সকার দশটায় ধর্ম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুনীল সমদ্দারের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তার নিজ বাড়ি গৈলা গ্রামের পারিবারিক শ্মশানে অন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।
উপজেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. বখতিয়ার আল মামুন জানান, অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পরা অপর রোগী সৈয়দ সরোয়ার হোসেনকেও উন্নত চিকিৎসার জন্য শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা) সৈয়দ সরোয়ার হোসেনের জ্ঞান ফেরেনি।