খুলনাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় গত ক’বছর ধরে একাধিক প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠতে না পারা মানুষ আবারো ঝড়ের আভাসে আতঙ্কে দিন কেটেছে। জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষার বেড়ি বাঁধগুলো অরক্ষিত থাকায়, ঝড়ে আবারো প্লাবনের আশঙ্কায় ছিল তারা। কয়রাবাসী বলছেন, বাঁধ স্থায়ী করতে নদী শাসনের বিকল্প নেই। তাই ঘুনিঝড় মোখায় ঝড়ের আতঙ্কে না থাকলেও নদী ভাংনের আতঙ্কে কেটে গেলো ১ দিন কয়রার মানুষের। আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাস অনুযায়ী বাংলাদেশ উপকূলে রোববার আঘাত এনেছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। অরক্ষিত বেড়িবাঁধ উপকূলীয় জেলা খুলনার সবচে’ ঝূকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে কয়রা। বর্তমানে উপজেলার ৬ নম্বর কয়রা, ৪ নম্বর কয়রা রিং বাঁধ, ঘাটাখালী, হরিণখোলা, মদিনাবাদ লঞ্চঘাট-সংলগ্ন এলাকা, মঠবাড়িয়া, ২ নম্বর কয়রা, হোগলা, গাজীপাড়া, গোলখালী, হাজতখালী, জোড়শিং ও মহেশপুর এলাকার প্রায় ১২ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে নদীতে পানি বাড়লে ওই এলাকার বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে পারে। এ ছাড়া কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নদীতে পানি সরবরাহের আটটি জলকপাট (স্লুইসগেট) অকেজো পড়ে আছে। শাকবাড়িয়া নদীর নয়ানী ও সুতিয়া বাজার-সংলগ্ন জলকপাটটি নষ্ট হওয়ার উপক্রম। জলকপাটের দুই পাশের মাটি দেবে গিয়ে নদী থেকে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে পারে এমন আশঙ্কা করছে স্থানীয়া। ঘূর্ণিঝড় আইলায় ও আম্মাফানে কয়রার বেড়িবাঁধের মারাত্মক ক্ষতি হয়। অনেক জায়গার বেড়িভাঁধ ভেঙে গোট এলাকা প্লাবিত হয়। দির্ঘ তিন বছর পর মানুষ পানি মুক্ত হয়। সেই থেকে ঘুর্নিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের কথা শুনলেও আতকে উঠে এই অঞ্চলের মানুষ। যার ক্ষত এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি উপকূলবাসী। ভাঙনের পর পানি উন্নয়ন বোর্ড তড়িঘড়ি যেনতেনভাবে বাঁধ মেরামত করলেও ভারি বর্ষণ আর জোয়ারের পানি বেড়ে গেলে এই বাঁধগুলো আর টিকে থাকে না। এবারও তাই আশঙ্কায় ছিল স্থানীয়রা। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের স্থায়ী সমাধানে নদী শাসনের দাবি তাদের। স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু রোববার কয়রার ঝুকিপুর্ন বেড়িবাঁধগুলো পরিদর্শন করেছেন এ সময় তিনি প্রতিবেদককে বলেন, টেকসই বেড়িবাঁধ প্রকল্পের কাজ টেন্ডার হয়েছে। দ্রুত সেটির কজ শুরু করা হবে। বাকি কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়াধিন আছে। কয়রার ঝুঁকিপূর্ণ বাধগুলো পর্যায়ক্রমে সংস্কার করে ঝুঁকিমুক্ত করার চেষ্টা চলছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মমিনুর রহমান বলেন, ঘুর্নিঝড় মোকাবেলায় কয়রায় সাবির্ক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়। উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলে ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের পরিমাণ বাড়ছে। এর থেকে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপকভাবে বরাদ্ধ দিয়ে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মান সহ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে।