কলেজ ছাত্র ফয়সাল হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন গ্রামবাসী। আসামীদের ফাঁসির দাবী করেছেন তারা। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরলেও পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না বলে অভিযোগ করেছেন ফয়সালের বাবা রাকিব মিয়া। ঘটনার এক মাস পেরিয়ে গেলেও আগের দুইজন ছাড়া কোন আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। বৃহস্পতিবার সকালে সরাইল সদরের প্রধান সড়কে ও উপজেলা পরিষদ চত্বরে সহ¯্রাধিক লোকের অংশগ্রহণে পালিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপরোল্লেখিত দাবী জানিয়েছেন গ্রামবাসী।
সরজমিনে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে সরাইল সদরের হাসপাতাল মোড় থেকে নিহত ফয়সালের ছবি, বিভিন্ন লেখা সম্বলিত ব্যানার ফেষ্টুন সহ কুট্রাপাড়া ও কালীকচ্ছ ইউনিয়নের সূর্যকান্দি গ্রামের সহ¯্রাধিক লোকের অংশগ্রহণে একটি বিক্ষোভ মিছিল সরাইল সদরে প্রবেশ করে। মিছিলে মামলার দুই আসামি চেয়ারম্যান ছায়েদ হোসেন ও ব্যবসায়ি জিহাদের ফাঁসির দাবীতে স্লোগান দেয়া হয়। পরে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আগেই সেখানে অবস্থান করছিল পুলিশ। ৪০ মিনিট স্থায়ী মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ গ্রহনকারী সকলেই ফয়সাল হত্যা মামলার আসামীদের দ্রƒত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবী জানিয়েছেন। লিখিত বক্তব্যে ফয়সালের বাবা রাকিব মিয়া অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে হত্যাসহ চাঞ্চল্যকর দুটি মামলার আসামিরা অদৃশ্য শক্তির সহায়তায় কালীকচ্ছ বাজারে প্রকাশ্যে অবস্থান করছে। তাই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। ফয়সালের বাবার দাবী আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আসামীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। গ্রেপ্তার কাজে কোন পুলিশ সদস্যের অবহেলা থাকলে তার বিরূদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। অনিয়ম প্রমাণিত হলে কালীকচ্ছের বিটের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাকে অপসারণ করতে হবে। দ্রƒততম সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। দাবী গুলো পূরণ না বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রাকিব মিয়া। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ফয়সাল হত্যা মামলার ৩ জন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একজন জামিনে এসেছেন। বাকি দুইজন জেলহাজতে আছে। সন্ধিগ্ধ অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত আছে। প্রসঙ্গত: তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১৪ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে কালীকচ্ছ বাজারে সূর্য্যকান্দি ও ধর্মতীর্থ এলাকার কয়েকশত লোক দাঙ্গায় লিপ্ত হয়। চুররা গুলির আঘাতে কলেজ ছাত্র ফয়সাল খুন হয়। পুলিশ নাকি দাঙ্গাবাজদের আঘাতে ফয়সাল নিহত হয়েছে? তা নিয়ে ধূ¤্রজালের সৃষ্টি হয়। হত্যার ঘটনায় প্রথমে নিহতের চাচা মো. মাহফুজ মিয়া ও পরে পিতা মো. রাকিব মিয়া বাদী হত্যা মামলা দায়ের করেন। আর ঘটনার রাতে দুই গ্রামের ৪৪৪ জনকে আসামি করে এস আই তারিকুল ইসলাম বাদী হয়ে বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেছেন। ঘটনার সময় আটক করা ১১ ব্যক্তিকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। দুই মামলায় এখন মোট আসামীর সংখ্যা ৪৬৯ জন।