ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউপি চেয়ারম্যান মো: আতাউর রহমান ও ধানশাইল ইউপি চেয়ারম্যান মো: শফিকুল ইসলাম দৈনিক এফ এন এস কে বলেন-’এই প্রচন্ড গরমে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। চলমান এসএসসি এবং অনার্স পরীক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীগণ বিদ্যুতের অভাবে পড়ালেখা করতে না পারায় তাদের পরীক্ষায় পাশ করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। অস্বাভাবিক গরম ও বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে নাকাল হয়ে পড়েছে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষ। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুরা সীমাহীন কষ্টের মধ্যে রয়েছে। তাছাড়া ঘন ঘন বিদ্যুতে আসা-যাওয়ার খেলায় বলি হচ্ছে পরীক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। বিদ্যুতের এ অবস্থা সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছে। দ্রুত এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ চান এলাকাবসী।’ এ অবস্থা শুধু শেরপুরের গারো পাহাড় ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ীতেই নয় শেরপুর জেলার সর্বত্রই।
’ঝিনাইগাতী সদরের অনার্স পরীক্ষার্থী শিল্পি ও তারেক রহমান বলেন, এই পরীক্ষার সময় ও প্রচন্ড গরমে বিদ্যুত না থাকাটা অত্যন্ত অমাণবিক কাজ। বিদ্যুতের অভাবে পড়ালেখা করতে না পারায় আমাদের পরীক্ষাই খারাপ হচ্ছে।’
’নালিতাবাড়ী উপজেলা থেকে প্রবীণ সাংবাদিক অমিরুল ইসলাম বলেন, টানা তাপদাহে তীব্র গরমের মধ্যে যে ভাবে লোডশেডিং চলছে তা সত্যিই অত্যন্ত অমাণবিক ও নিষ্ঠুর কাজ।’
’শ্রীবরদী উপজেলা থেকে এক ক্লিন রাজনৈতিক নেতা মো: আবদুর রহিম দুলাল বলেন, এমন নজিরবিহীন লোডশেডিং আর কোন দিন দেখিনি। দিনে-রাতে তীব্র গরমে যখন মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা তখন নামাজের সময় পর্যন্ত বিদ্যুৎ না থাকাটা কতটা অমাণবিক তা ভূক্তভোগি ব্যতিত. কেউ বুঝতে পারবেন না।’
অপর দিকে কোন লাইনে কার্বন জমলেও ঝিনাইগাতী বিদ্যুৎ অফিসের লাইনম্যান আমিরুল ইসলাম তার কেটে সংযোগ দিতেই ৪-৫ শ’ টাকা করে সেলামি নিচ্ছেন বলে অভিযেগ উঠেছে। তাছাড়া ভৌতিক বিলও করা হচ্ছে গ্রাহকদের নামে। জানা যায় কোন মাসেই মিটার দেখে বিল করা হচ্ছে না। অফিসে বসেই মনগরা ভাবে একেক আবাসিক গ্রাহকেরও বিল করা হয় মাসে ২-৩ হাজার টাকা করে।
’এমন বিল করেছেন গৃহিনী মিসেস হিরা সাত্তারের বাসায় গত মাসে ২ হাজার ১৯ টাকা। অথচ ওই বাসায় মাত্র ২ টি বাল্ব ও ২টি ফ্যান চলে। মিটার দেখে বিল করা হলে ৩-৪শ’ টাকার ওপরে বিল হবে না বলে জানিয়েছেন ওই গৃহিনী।’
’ঝিনাইগাতী উপজেলা সদরের এক গৃহিনী সাথি আক্তার বলেন, বিদ্যুৎ থাকেনা অথচ ভৌতিক বিল করা হচ্ছে প্রতি মাসেই।’
প্রসঙ্গঁত. শেরপুর গারো পাহাড় অঞ্চলের সর্বত্র বিদ্যুতের ঘন ঘন যাওয়া আসায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবণ। এই দুঃসহ্য গরমে সাধারণ মানুষ রাতদিন লোডশেডিংয়ের তীব্র যন্ত্রনায় এখন অতিষ্ট। অবিশ^স্য হলেও সত্য নামাজের সময় পর্যন্ত থাকছে না বিদ্যুৎ। অর্ধেক ঘাটতির কথা ব্যাতিত. বিদ্যুৎ বিভাগ কোন সদুত্তোর ও দেন না।
এই তীব্র গরমে এ ধরণের অমাণবিকভাবে বিদ্যুৎ না থাকায় সাধারণ মানুষ হয়ে পড়েছে অতিষ্ট। বিদ্যুৎ ঘাটতির অজুহাতে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকছে না গারো পাহাড় অঞ্চলে। এ যেমন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।
’ঝিনাইগাতী উপজেলা সদরের এস.কে. সাত্তার মার্কেটের ইতি ইলেকট্রনিক্সের মালিক খোরশেদ আলম আকন্দ, কম্পিউটার মেকানিক্স এবাদূর রহমান, আতিক স্টোরের মালিক মো.সিদ্দিকুর রহমান, মধ্যবাজার তাহমিনা ফ্যাশন হাউজ মালিক আশ্রাফুল আলম প্রমূখ ব্যবসায়ীগণ জানান, ’এই নজিরবিহীন গরমে বিদ্যুৎ না থাকাটা কতটা অমাণবিক তা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। কোন প্রকার নোটিশ/ মাইকিং ব্যাতিরেকে বিদ্যুতের ঘন ঘন আসা যাওয়ার খেলায় আমরা ব্যবসায়ীরাই বলি হচ্ছি। টানা বিদ্যুৎ না থাকাটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। কোন উজর আপত্তি নেই, ইচ্ছে হলেই লোডশেডিং। যেনো মগের মুল্লুকে বাস করছি আমরা। তাও একবার দুইবার নয় দিনে রাতে ২০/ ২৫ বার করে ও বিদ্যুৎ চলে যায়। ২/৪ ঘন্টা বিদ্যুতের কোন খবর থাকে না। ফলে টানা বিদ্যুতের অভাবে আইপিএস চার্জ ও করা যাচ্ছেনা। এমনই মহা বিপদে আছি আমরা। আইপিএস চার্জ হলেও গরমের মধ্যেই রাতে অন্তত. আলো জ¦ালিয়ে ব্যবসা করা যেতো। অন্ধকারে বেচা-বিক্রি ও কম হয়। ঝুকি ও বাড়ে।’
’বিদ্যুৎ বিভাগের ঝিনাইগাতীর আবাসিক প্রকৌশলী বলেন, মোট চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ পাচ্ছি। তাতেই পুরো এলাকা ভাগাভাগি করে সাপ্লাই দিতে হচ্ছে। সুতরাং কি করার আছে।’
’বিদ্যুৎ বিভাগের অন্য এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, লাইনে সমস্যা বা গ্রিডে সমস্যার কারণে ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। এ ছাড়া ঘাটতি জনিত লোডশেডিংতো আছেই।’ তাছাড়া বিভিন্ন এলাকায় লাইন মেরামত কাজের জন্যও সাময়িক লাইন বন্ধ রাখাতে হয়।’
’ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও ) মো: ফারুক আল মাসুদ দৈনিক এফ এন এস কে বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করবো।’