সুন্দরবন উপকূলের জনপদ খুলনার কয়রা উপজেলা। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রতিবছর উপজেলাটি বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুযোর্গের সম্মুখীন হতে হয়। ঘূর্ণিঝড় আইলা, সিডর, আক্ষানে বিধ্বস্থ হয় উপজেলার অধিকাংশ বেড়িবাধ। বেড়িবাধ ভেঙে পানি লোকালয়ে ডুবার ফলে কয়রা উপজেলার অসহায় জনগনের দুঃখ দুর্দশার শেষ থাকে না। উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোবরা হরিণখোলা এলাকা ভেঙে উপজেলার সদর প্লাবিত হয়। উপকূলীয় এ উপজেলার অধিকাংশ জায়গার নদীর বাঁধ ভাঙ্গাা ও ঝুঁকিপূর্ণ ছিল এবং কয়েক বছর পরপর লোনা পানিতে প্লাবিত হয়। দুর্যোগ কবলিত এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল টেকসই বেড়িবাধ নির্মাণ। স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবুর প্রচেষ্টায় সেটি সম্ভব হয়েছে। এমপি বাবুর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ও এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি হিসাবে তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় খুলনার কয়রা সদর ইউয়িনের বারবার ভাঙন কবলিত এলাকা গোবরা ঘাটাখালী বাঁধের ভাঙ্গন রোধকল্পে সরকার দ্রুত বাঁধ মেরামত ও সংস্কার এবং টেকসই বাঁধ নির্মাণের জন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দিয়ে সেটি সংস্কার করে দেয়। প্রকল্পের বাস্তবায়নের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের ৩ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন। কপোতাক্ষের বাঁধ নির্মাণের ফলে ভাঙ্গাচোরা বেড়িবাঁধ এখন দৃশ্যমান, চওড়াা ও প্রশস্ত। শুধু তাই নয় সরকারে পক্ষ থেকে অসংখ্য মানুষের গৃহ নির্মান করে দেওয়া হয়েছে। উপজেলার সদর ইউনিয়নে বারবার ভাঙন কবলিত গোবরা ঘাটাখালী হরিণখোলা এলাকার কপোতাক্ষ নদে টেকসই বেড়িবাঁধ নিমার্ণ হওয়ায় স্বত্তি ফিরেছে এলাকার মানুষের মধ্যে। ২০০৯ সালে আইলা পরবর্তী সময়ের মতো দুঃসহ কষ্টের মধ্যে পড়ে এ উপজেলার মানুষ। আম্মান, ইয়াাস মত ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে দফায় দফায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে উপজেলাবাসী। এতে এ এলাকার মানুষ অর্থনৈতকভাবে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়। ষাটের দশকে নির্মিত দুর্বল বেড়িবাঁধের ওপর বছর বছর কোন রকমে মাটি চাপা দিয়ে পানি আটকানো হতো। আইলা পরবর্তী সময়ের মতো আম্ফানে দুঃসহ কষ্টের মধ্যে পড়ে এ উপজেলার মানুষ। নদীর নাব্যতা সংকটে পানির চাপ ও বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ এসব বাঁধ পানি আটকাতে ব্যর্থ হচ্ছিল। এ অবস্থায় প্রয়োজন ছিল দীর্ঘমেয়াদী শক্ত মজবুত বেড়িবাধ নির্মাণ। মানুষের সেই আশা পুরুন করেছে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহজ¦ মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু। সাইক্লোন আম্মান আঘাত হানে ২০২০ সালের ২০ মে। সাইক্লোন সিডরের পর এটাই ছিল দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড় আম্মানে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ২১টি স্থানে বাঁধ লন্ড ভন্ড হয়ে যায়। পুনঃনির্মাণ কাজে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এ অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা ৫৫ পদাতিক ডিভিশন তাদের কার্যক্রম শুরু করে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের আপ্রাণ চেষ্টায় বিধ্বস্থ এই জনপদে এলাকাবাসীর পুনর্বাসন কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়। এতে থেমে ছিলোনা কয়রারবাসীর স্বপ্ন। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মানের জন্য কয়রা পাইকগাছার সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবুর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় একনেক সভায় কয়রা এলাকার জন্য দুটি প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয় কয়রা স্থায়ী বেড়িবাধঁ নির্মান প্রকল্প। কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ও উত্তর বেদাকশী ইউনিয়নে পোল্ডার নং-১৪/১ পুনর্বাসন প্রকল্প। প্রকল্প বাস্তবায়নের ধায্য ধরা হয় ১ হাজার ১৭২ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এ টাকার মধ্যে ১০ দশমিক ৯৭ কিলোমিটার বেড়িবাধের নদী তীর সংরক্ষণ, বাঁধ পুনর্বাসন কাজ হবে ১৩ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার, বাঁধের অভন্তরে বৃষ্টির পানি অপসারণে রেগুলেটর নির্মাণ কাজ হবে ৪টি, চিংড়ি চাষের জন্য পরিকল্পিত উপায়ে নদী থেকে লবণ পানি প্রবেশ করাতে ইনলেট নির্মাণ হবে ১৩টি। ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের ১ টি কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া সমপন্ন করা হয়েছে। বাকি আর ১ টি কাজের টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। এতে করে আবারও কয়রার মানুষ সুন্দরভাবে বসবাস করার স্বপ্ন দেখছে। আর এটি সম্ভব হয়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্যর প্রচেষ্টায়। এলাকার সর্বস্তরের মানুষ তাকে সাধুবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছে। উত্তর বেদকাশি ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ সরদার নুরুল ইসলাম বলেন, যেখানেই বেড়িবাধ ভেঙ্গেছে সেখানেই ছুটি গেছেন এমপি মহাদ্বয়। তার চেষ্টায় গাজীপাড়া, কাশিরহাটখোলা ও গাতির ঘেরির বেড়িবাঁধ অল্প সময়ের মধ্যে বাধা সম্ভব হয়েছে। কয়রার সদরের ইউপি সদস্য শেখ আবুল কালাম বলেন, বর্তমান সরকার কয়রার মানুষের জন্য যে প্রকার অর্থ বরাদ্ধ দিয়ে আম্ফান পরবর্তিতে সময় এলাকার উন্নতি করেছে তা প্রশংসার দাবিদার। মঠবাড়ি এলাকার ইউপি সদস্য আবু সাইদ মোল্যা বলেন, এমপি মহাদ্বয় শুধূ বেড়িবাঁধ সংস্কার নয় সাধারন মানুষের কল্যাণেযে কাজগুলো করেছে তা বিরল। তার জন্য কয়রাবাসি সব সময় দোয়া কামনা করে। কয়রার দক্ষিন বেদকাশি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আছের আলী মোড়ল বলেন, বেড়িবাঁেধর কাজ শুরু হওয়ায় দুর্যোগ প্রবন কয়রার দক্ষিন বেদকাশির মানুষ আবারও স্বস্তিতে বসবাস করার স্বপ্ন দেখছে। কয়রা-পাইকগাছার সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, কয়রার স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মান প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায়। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী কয়রা-পাইকগাছাবাসীর দুঃখ দুর্দশা লাঘোবে এত বড় প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। তার জন্য দোয়া কামনা করে এমপি বাবু আরও বলেন, বর্তমান সরকারে আমলে কয়রা-পাইকগাছায় যে সকল উন্নয়নমুলক কাজ হয়েছে তা অতীতের কোন সরকারের আমলে তা সম্ভব হয়নি।