ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেন বলেছেন, দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা টাকা পাঁচার করেন। আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যে আন্ডার ইনভয়েসিং ও ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং হয়েছে। সোমবার রাজধানীর ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এবিবি আয়োজিত ‘ব্যাংকিং সেক্টর আউটলুক-২০২৩’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় এবিবির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, আন্ডার ইনভয়েসিং ও ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং হয় এটা আমরা জেনেছি গত দেড়-দুই বছর আগে। কিন্তু এর অনেক আগে থেকেই এ পদ্ধতিতে টাকা পাঁচার হয়েছে। আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে টাকা পাঁচারে সু্যােগ রয়েছে, যার সবগুলো উপায় ব্যাংকাররা জানেন না। সেই সু্যােগে এ পর্যন্ত মানি লন্ডারিং হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের আমদানি এলসি নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণের কারণে গত বছর থেকে এর হার অনেক কমে এসেছে। নন পারফরমিং লোন (এনপিএল) বা খেলাপি ঋণ নিয়ে এবিবির চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাংক খাতের শুরু থেকেই এনপিএল বাড়ন্ত ছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দিক নির্দেশনায় এনপিএল কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা ব্যাংকগুলো কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিন বলেন, আগে আমাদের প্রতি মাসে ৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হতো, কিন্তু তা এখন কমে সাড়ে ৪ বিলিয়নে এসেছে। কমে যাওয়া আড়াই বিলিয়নের মধ্যে এক বিলিয়ন তৈরি পোশাক খাতের মেশিনারিজ আমদানি এবং বাকি দেড় বিলিয়নের মধ্যে ওভার ইনভয়েসিং হতো। যা এখন কমে এসেছে। মাসরুর আরেফিন বলেন, আমাদের ব্যাংকিং সেক্টরের প্রতি গ্রাহকের আস্থা বেড়েছে। এখন ডিপোজিট বেড়েছে, রেমিট্যান্স বাড়ছে। ডলারের রেট ৮৭ টাকা থেকে ১০৮ টাকা হয়েছে। দেশের পুরো ব্যাংকখাতে এখন অতিরিক্ত ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা তারল্য রয়েছে। সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, এখনও এলসি খুলতে সমস্যা হচ্ছে। ছোট ছোট এলসিগুলো খুলতে পরছি না। আমাদের কাছে ১০টি এলে হয়তো ৪টি এলসি খুলতে পারছি। তবে আমাদের ভালো দিক হলো এক্সপোর্ট বাড়ছে, রেমিট্যান্স বাড়ছে। তিনি বলেন, করোনার পর ইউক্রেন-রাশিয়া পরিস্থিতিতেও অর্থনৈতিক মন্দায় কাটি উঠতে শুরু করছে ব্যাংকখাত। এখন আমানত বাড়ছে কিন্তু সে তুলনায় ঋণ বিতরণ কমেছে। এখন অতিরিক্ত ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা তারল্য রয়েছে।