রাজশাহীর তানোরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিমেন্টের বড় আকারের বন্ধু চুলা দিয়ে মাথায় আঘাত করে করে চাচার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে ভাতিজা হাসান। এক আঘাতেই চাচা বেলালের মাথা ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে তানোর উপজেলার সরনজাই ইউনিয়ন ( ইউপির) কাচারিপাড়া গ্রামে ঘটে মারপিটের ঘটনা। এ ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়ে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন চাচা বেলাল (৪৫)। তার মাথায় আটটি সেলাই দেওয়া হয়েছে এবং প্রচুর রক্তক্ষরনের কারণে তেমন ভাবে কথা বলতে পারছেন না তিনি। অপর দিকে চাচা মেতিকেলে থাকার সুযোগ নিয়ে ভাতিজা হাসান চাচার পরিবারকে বাড়ি ছাড়া ও প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। এতে করে উভয় পরিবারের মধ্যে চরম উত্তজনা বিরাজ করার পাশাপাশি চরম নিরাপত্তা হীনতার মধ্যে পড়েছেন বেলালের পরিবার। ফলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন না হলে যে কোন মুহুর্ত্বে ভয়াবহ সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন গ্রাম বাসিরা।
গ্রামবাসী ও পরিবার সুত্রে জানা গেছে, তানোর উপজেলার সরনজাই ইউপির কাচারিপাড়া গ্রামে বুধবার সকালের দিকে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে বেলালের ৪র্থ শ্রেণী পড়ুয়া ছেলে তুহিনকে গলা টিপে চড় থাপ্পর মারের ভাতিজা হাসানের স্ত্রী ববিতা। চড় থাপ্পড় মারার বিষয়ে তুহিনের পিতা বেলাল জানতে চাইলে পিছন থেকে সিমেন্টের বড় আকারের বন্ধু চুলা দিয়ে মাথায় আঘাত করেন ভাতিজা হাসান। আঘাতের সাথে সাথে চিৎকার দিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে নুয়ে পড়েন চাচা বেলার। এ সময় স্বামীকে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে আসলে স্ত্রী সাবিনাকে (চাচীকেও) মারপিট করেন হাসান ও তার স্ত্রী। গ্রামবাসী বেলালকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়ে দেন।
বেলালের স্ত্রী সাবিনা বলেন, আমার ছেলের গলা টিপে ধরে গালে চড় থাপ্পর মারে হাসানের স্ত্রী ববিতা। এর কারণ জানতে গিয়ে মেরে ফেলার জন্য হাসান সিমেন্টে বড় চুলা দিয়ে মাথার পিছন দিকে আঘাত করা মাত্রই জ্ঞান হারিয়ে জামা কাপড় রক্তে রঙ্গিন হয়ে পড়ে আমার স্বামীর এবং আমাকেও মারধর করা হয়েছে।
হাসপাতালের বেডে নিথর অবস্থায় শুয়ে আছেন বেলাল, তিনি বলেন লোকজন দ্রুত উদ্ধার করে মেডিকেলে না আনলে মারা যেতাম। তিন সার্ট রক্তে ভিজে গেছে। সরনজাই বাজারে মেম্বারসহ অনেকে দেখে হতবাগ হয়ে পড়েন। প্রচুর রক্ত বের হওয়ার কারণে মাথা যন্ত্রনা ও শরীর প্রচন্ড দূর্বল হয়ে পড়েছে। থানা পুলিশকে দেখিয়েছি, সন্ধ্যার পরে অভিযোগ করা হবে। মাথায় আটটি সেলায় লেগেছে এবং শরীরে এলোপ্যাথি মারার কারণে ব্যাথার সৃষ্টি হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। তার মাথার পিছন দিকের বাম সাইডে ব্যান্ডিজ করা আছে। হাসান বলেন, আমার স্ত্রী ও মাকে মেরেছিল এজন্য বেলালকে উচিত শিক্ষা দেওয়া হয়েছে বলে দাম্ভিকতা দেখান।
বেলালের স্ত্রী ববিতা জানান, আমরা মারিনি, স্বামীর মাথা ফাটিয়ে উল্টো হাসান আমার দুই সন্তাকে মেরে ফলার হুমকি দিয়ে বলছে যত টাকা জরিমানা হোক দেওয়া হবে। আমি দুই সন্তানকে বাড়ির ভিতরে রেখে এসেছি। বের হলেই মারবে। বিকেলে বাড়িতে আসার পর প্রতিবেশিরা বলছে তারা নিজেরাই শরীর কেটে হাসপাতালে গিয়েছিল। কিন্তু অল্প ক্ষত এজন্য ভর্তি হাসপাতল কর্তৃপক্ষ ভর্তি নেয়নি। আমার সন্তান ও আমার কোন নিরাপত্তা নাই। যে কোন সময় মেরে ফেলতে পারে।
কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, মাথার ক্ষত ভয়ানক, সেলাই দিয়ে রক্ত বন্ধ করা হয়েছে, সিটি স্ক্যান না করা পর্যন্ত কিছুই বলা যাবে না। থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, এ ঘটনায় এখনো কোন অভিযোগ পায়নি, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।