খুলনার পাইকগাছা পৌরসভার প্রাণকেন্দ্রে মধুমিতা পার্কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ সংক্রান্ত মহামান্য হাইকোর্টের মামলায় জয়লাভ করায় মামলার বাদী ও পাইকগাছা নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাড. প্রশান্ত মন্ডলকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিছে পাইকগাছা নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির নেতৃবৃন্দ। গত ২৩ মে আ্যড. এর চেম্বারে শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি মো. আবদুল মজিদ গাজী, এমএ লতিফ, সাধারণ সম্পাদক রবীন মন্ডল, সাংবাদিক মহানন্দ অধিকারী মিন্টু, অ্যাড. সাইফুদীন সমুন, শঙ্কর মন্ডল প্রশান্ত সরকার, আবুল কাশেম, ফারুক হোসেন ও মৃনাল গাইন প্রমূখ। নেতৃবৃন্দ মামলায় জয়লাভ করায় মামলার একমাত্র জীবিত বাদী অ্যাড. প্রশন্ত মন্ডলকে ফুলেল শুভেচছা এবং তার দীর্ঘায়ু কামনা করেন। এদিকে মধুমিতা পার্ক প্রায় তিন দশক পর পূর্বের অবস্থা ফিরে পাচ্ছে দেখে সাধারন মানুষ উচ্ছ্বাসিত। আদালতের সিদ্ধান্তে মামলার জীবিত বাদি ও পার্কে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ আন্দোলন সংগ্রামে সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। উল্লেখ্য, পাইকগাছা পৌরসভার প্রাণ কেন্দ্রে খুলনা জেলা পরিষদের ১ একর আয়তনের একটি পুকুর রয়েছে। এ লবণাক্ত জলা ভূমিতে পুকুরের পানি এলাকার মানুষ সুপেয় পানি হিসেবে ব্যবহার করায় পুকুরটি মিষ্টি পুকুর নামে পরিচিত। ১৯৮০ সালের দিকে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ও খুলনা জেলা প্রশাসকের সার্বিক সহযোগিতায় পুকুরটির চারিপাশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ এবং পার্কের আদলে পুকুরের পাড়ে পাঁকা রাস্তা ও বসার জন্য বেঞ্চ নির্মাণ করা হয়। ফলে এটি মধুমিতা পার্ক নামে এলাকায় পরিচিত হয়ে ওঠে। সেই থেকে এখনো পর্যন্ত এলাকার মানুষ এটিকে মধুমিতা পার্ক ও মিষ্টি পুকুর নামে জেনে আসছে। এদিকে ১৯৯৫-৯৬ সালের দিকে এলাকার কতিপয় ব্যবসায়ীরা জেলা পরিষদের নিকট থেকে পুকুরের পাড় ইজারা নিয়ে মার্কেট গড়ে তোলে। এর ফলে সুপেয় পানি ও মধুমিতা পার্কের চিত্তবিনোদন ব্যবস্থা বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় ২০০৫ সালে স্থানীয় আইনজীবী জিএ সবুর, আবু সাঈদ, আবদুর সাত্তার মালী, সাংবাদিক মিথুন মাফুজ ও প্রশান্ত মন্ডল সহ অনেকেই বাদী হয়ে জনস্বার্থে মার্কেটের সকল কার্যক্রম বন্ধ ও উচ্ছেদের দাবীতে সিনিয়র সহকারী জজ আদালত পাইকগাছায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পরবর্তীতে উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। হাই কোর্টে একটি রীট পিটিশন দাখিল করা হয় যার নং-৩৫৯০/০৫। উচ্চ আদালত মধুমিতা পার্কের অভ্যন্তরে অবৈধ নির্মাণ কাজ বন্ধের আদেশ দেন। এ আদেশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় পরবর্তীতে মধুমিতা পার্ক সংরক্ষণ কমিটি বিজ্ঞ উচ্চ আদালতে কোর্ট অব কমেন্ট পিটিশন দাখিল করেন, যার নয়-১০২/২২। পিটিশনের কয়েক দফা শুনানী আন্তে চলতি বছরের ১৩ মার্চ বিজ্ঞ উচ্চ আদালত মামলার বিবাদীদ্বয়কে ২০ দিনের মধ্যে মধুমিতা পার্কের সকল স্থাপনা উচ্ছেদ করে পার্কটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য আদেশ দেন। সর্বশেষ আদালতের আদেশ মোতাবেক ২০ মে স্কেভেটর দিয়ে অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। আদালতের আদেশ মোতাবেক স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে বলে জানান, খুলনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উপ-সচিব এমএম মাহমুদুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল-আমিন ও আশাশুনি ফায়ার স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা আবুল কালাম মোড়ল। এদিকে স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মধুমিতা পার্ক সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি অ্যাড. এফএমএ রাজ্জাক ও আদালতে মামলার জীবিত বাদী অ্যাড. প্রশান্ত মন্ডল।