রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় ৩৮ দিন বয়সের এক কন্যা শিশুকে হত্যা মামলায় মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা আলামিন হোসেন বাদী হয়ে মোহনপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
এর আগে শনিবার (২৭ মে) বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে মোহনপুর উপজেলার মৌগাছি ইউনিয়নের বকপাড়া (মধ্যপাড়া) গ্রামে গরুর খাবারের পাত্রের পানির মধ্যে থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। পরে সন্দেহ হলে শিশুটির মা তানিয়া খাতুন (২০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শিশু আয়শা আক্তার তাঁদের দ্বিতীয় সন্তান ছিল। প্রথম সন্তান ছেলে।
পুলিশ জানায়, শনিবার বিকেলে শিশুটির বাবা আগেই বাড়ির বাইরে গিয়েছিলেন। তার পর তাঁর মা তানিয়াও প্রতিবেশীকে কুকুরে কামড় দিয়েছে বলে দেখতে যান। এ সময় তানিয়ার জা রোজিনা খাতুন তাঁদের বাড়িতে এসে দেখেন, শিশুটি গরুর খাবারের পাত্রের পানির মধ্যে পড়ে মরে রয়েছে। তিনি চিৎকার করলে সবাই ছুটে আসেন।
শিশুটির বাবা জানান, বাড়িতে স্ত্রী ও শিশু কন্যা ছাড়া আর কেউ ছিল না। খবর পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক বাড়িতে এসে দেখেন মেয়ে মারা গেছে। পরে স্ত্রী তাঁকে জানান, বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শোবার ঘরে শিশুটিকে ঘুমে রেখে ওয়াশরুমে যান। ওয়াশরুম থেকে শুনতে পান পাশের বাড়িতে কাকে যেন কুকুর কামড় দিয়েছে। ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে তিনি সেখানে যান। এরপর রোজিনার চিৎকারে দ্রুত বাড়িতে ছুটে আসেন এবং দেখেন মেয়ে মারা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী রোজিনা খাতুন বলেন, পাশের বাড়িতে বিয়ে হচ্ছিল। বিয়ে বাড়িতে যাওয়ার জন্য তানিয়াকে ডাকতে এসে দেখেন গরুর খাবার পাত্রের পানির মধ্যে শিশুর মরদেহ ভাসছে। তার পর তিনি চিৎকার করে সবাইকে ডাকেন।
মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহা. সেলিম বাদশাহ বলেন, ওই নারীর চিৎকারে আশপাশের সবাই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। শিশুটির মা-ও আসেন। কিন্তু তিনি শিশুর মরদেহ দেখে প্রথমে কান্নাকাটি করেননি। এতে সন্দেহ হয়। রাতে তাঁকে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন, মাথায় জিন চাপলে কী হয়, তিনি আর মনে করতে পারেন না। ওসি আরও বলেন, শিশুটির বাবা যে মামলাটি করেছেন, তাতে তানিয়া খাতুনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।