খুলনার পাইকগাছা পৌরসভায় মৎস্যআড়ৎ ইজারা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন ইজারাদার। ইজারা গ্রহণের দেড় মাস অতিবাহিত হলেও সংশ্লিষ্ট আড়ত থেকে এখনো পর্যন্ত একটি টাকাও আদায় করতে পারেননি ইজারাদার। ইজারাদার একাধিকবার সংশ্লিষ্ট আড়তে আদায় করতে গেলেও আড়তের ব্যবসায়ীরা ইজারার টাকা দিতে অস্বীকার করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ইজারাদার সাইফুল ইসলাম। পৌর কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট আড়ৎটি এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ইজারাদারকে বুঝে দেননি এমন অভিযোগ রয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। পৌরসভা এবং মৎস্যআড়ৎ এর মধ্যকার সৃষ্ট জটিলতা নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছেন ইজারাদার। লাভের স্থলে এখন বিনিয়োগ করা সাড়ে ৬ লাখ টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে চরম শঙ্কায় ইজারাদার। ইজারাদার সাইফুল বলেন, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ১৪৩০ সনের জন্য পৌরসভার হাট বাজার ইজারার টেন্ডার আহ্বান করা হয়। যার মধ্যে ৬নং ক্রমিকে পাইকগাছা মৎস্য আড়ত উল্লেখ থাকে। আমি মৎস্য আড়তের অনুকূলে টেন্ডারে অংশ নেই। সর্বোচ্চ ৫ লাখ ৪১ হাজার ১শ টাকা দরদাতা হিসেবে আমি মৎস্যআড়তের ইজারাদার বিবেচিত হই। পরবর্তীতে ১০ এপ্রিল পৌরসভা থেকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে ইজারার মূল্য পরিশোধ করার জন্য পৌরসভা থেকে আমাকে চিঠি দেওয়া হয়। আমি এনআরবিসি ব্যাংকের বিডি’র মাধ্যমে ১ লাখ ৬২ হাজার ৩৩০ এবং পৌরসভার আদায় রশিদের মাধ্যমে ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৭৭০ টাকা ও প্রয়োজনীয় ভ্যাট এবং আয়কর সহ সর্বমোট ৬ লাখ ৪৯ হাজার ৩২০ টাকা ইজারার সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করি। এরপর পৌরসভা থেকে আমাকে পহেলা বৈশাখ ১৪৩০ সন থেকে সংশ্লিষ্ট আড়ত থেকে ইজারার টাকা আদায় করার জন্য বলা হয়। আমি যথারীতি ইজারার টাকা আদায় করতে আড়তে গেলে আড়তের সভাপতি-সম্পাদক সহ ব্যবসায়ীরা উচ্চ আদালতের বরাত দিয়ে আমাকে ইজারার টাকা আদায় করা থেকে বিরত রাখতে বাধ্য করে। এভাবেই আমি একাধিক বার আদায় করতে গিয়ে ফিরে এসেছি। বিষয়টি পৌর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলেও পৌর কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে এ বিপুল পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করে বর্তমানে চরম বিপাকে রয়েছি। এ ব্যাপারে মৎস্য আড়ৎদারী সমবায় সমিতির সভাপতি জাকির হোসেন জানান, মৎস্য আড়ৎটি কোন পেরিফেরি জায়গার উপর নয়, এটি সম্পূর্ণ আমাদের নিজেদের জায়গার উপর। পৌরসভা যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে টেন্ডার আহ্বান করেনি। বিষয়টি নিয়ে ইউএনও মহোদয়ের কার্যালয়ে বসাবসি হয়েছে। ইউএনও মহোদয় যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করার জন্য নির্দেশনাও দিয়েছেন। চলতি দায়িত্বে থাকা মেয়র শেখ মাহাবুবর রহমান রঞ্জু জানান, উচ্চ আদালতের দোহায় দিয়ে আড়ত কর্তৃপক্ষ পৌরসভা সহ সকলকে বিভ্রান্ত করছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে পৌরসভা থেকে জেলা প্রশাসক ও ডিডিএলজি মহোদয়ের সহযোগিতা চেয়েছি। আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এর একটি সুষ্ঠু সমাধান হয়ে যাবে বলে তিনি জানান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম বলেন, দুই পক্ষকে নিয়ে ইতোপূর্বে এ বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা করা হয়েছে। মেয়রের উপস্থিতিতে সব পক্ষকে নিয়ে পুণরায় আলোচনার মাধ্যমে এর সুষ্ঠু সমাধান করা হবে।