রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় মুজিব বর্ষের উপহার ঘর বিতরনে দুর্নীতি অনিয়ম আর পক্ষপাতিত্বের আশ্রয় নেয়া হয়েছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে। মুলতঃ গৃহহীন,ভুমিহীনদের এসব ঘর বরাদ্দ দেয়ার কথা থাকলেও অনেক স্বচ্ছল,বিত্তবান,একই পরিবারে একাধিক,পাকা বাড়িঘর আছে এমন ব্যক্তি,জমিজমা ভিটে মাটিতে নিজের বাড়ি ছাড়াও ব্যবসা আছে,এমন ব্যক্তিকেও ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে রহস্যজনক কারনে। কুমেদপুর ইউনিয়নের বগের বাড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পে বরকত আলীর ছেলে রানা মিয়াকে একটি ঘর দেয়া হয়েছে। তার গরুর খামার রয়েছে। রয়েছে নিজস্ব মোটর সাইকেল। আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে মাত্র ৩’শ গজ দুরে তার নিজস্ব বাড়িও রয়েছে। এখানে ভোলা মিয়ার ছেলে সোনা মিয়াকে ১ টি ঘর দেয়া হলেও তার পুর্ব থেকেই নিজস্ব পাকাঘরবাড়ি রয়েছে ৪ টি কক্ষের। লাজু মিয়ার স্ত্রী শোভা রানীর নামে ১ টি ঘর দেয়া হয়েছে। লাজুর ৫ টি গরু রয়েছে। পুর্ব থেকেই ১০ শতক জমির উপর মাটির দেয়ালের বাড়িঘর রয়েছে। তারেকের শ্বাশুড়ী হারুন মিয়ার স্ত্রী পারুল বেগমের নামে ১ টি ঘর দেয়া হয়েছে। এরা ৫ লাখ টাকার জমি বন্ধক নিয়ে চাষাবাদ করে। গরুও আছে ৫ টা। মৃত গনির ছেলে বকুল এর পাকা ঘরবাড়ি ও আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকার পরেও তারে নামে ১ টি ঘর দেয়া হয়েছে। সরেজমিন শনিবার চতরা ইউনিয়নের শমসের পাড়া গিয়ে দেখা যায়, আবদুল গফুরকে একটি ঘর দেয়ার পরেও তার ২ ছেলে শফিকুল ,লিটন ও মেয়ে সুখী মাইকে পৃথক পৃথক আরও ৩ টি ঘর প্রদান করা হয়েছে। আবদুল গফুরের বাড়ি ছিল একসময় গাইবান্ধা বালাসী কানাসোনার চরে। নদীতে বাড়িঘর বিলীন হবার পর এরা একযোগে এক মহল্লার ১২৫ পরিবার এই এলাকায় এসে বসতি গড়ে তোলে। আবদুল গফুর একাই নিজের,২ ছেলে,১ মেয়েসহ ৪ টি বাড়ি হাতিয়ে নিয়েছে। অথচ এরা এই এলাকার ভোটারও নন কেউই। ঘোনা চতরা এলাকায় নিজের বাড়ি থাকার পরেও মনজুর স্ত্রী চামেলী বেগমের নামে একটি ঘর দেয়া হয়েছে। মহির উদ্দিনের স্ত্রী তাহেরা বেগমের নামে একটি ঘর দেয়ার পরেও মেয়ে মনজিলার নামে পৃথক ১ টি ঘর দেয়া হয়েছে। অথচ শেরপুর গ্রামের এদের ইটের বাড়িঘর রয়েছে। মৃত ইদু মামুনের ছেলে মহির উদ্দিন ১ টি ঘর পাবার পর গার্মেন্টস কর্মী মেয়ে মনজিলার নামেও নতুন ১টি ঘর দেয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চতরা ইউনিয়নের এক জনপ্রতিনিধি জানান,তাদের দেয়া তালিকা উপেক্ষা করে ঘর নির্মানের দায়িত্বে নিয়োজিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিরোদা রানী রায় নিজস্ব লোক দিয়ে নতুন তালিকা করে এসব ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন। এ পর্যন্ত তিনি গোটা উপজেলায় ৫’শ ১৫ টি ঘর নির্মান ও বরাদ্দ দিয়েছেন। শুধু শমসের পাড়া ও বগেরবাড়িতেই এ নয়ছয় চিত্র নয়, এ চিত্র গোটা উপজেলার। মুজিব বর্ষের উপহার ঘর নির্মানের জন্য নিজ গ্রাম পঞ্চগড় দেবীগঞ্জের সোনাহার শালিকাদহ থেকে সবদের আলীর ছেলে ইব্রাহীম ও নিরঞ্জন নামের মিস্ত্রী এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক লেবার এনে এখানে ঘর নির্মানের কাজ করাচ্ছেন। যাতে করে ঘর নির্মানের কোন তথ্য কোনভাবেই কেউ জানতে না পারে। তাঁর মন্তব্য নেয়া সম্ভব না হলেও এ ঘটনার পেছনে কি উদ্দেশ্য ? তা তিনিই ভাল বলতে পারার কথা।