কেশবপুরের জিয়াউর রহমান (২৫) নামে এক প্রবাসী যুবককে লিবিয়ায় অপহরণ করে হাত-পা বেঁধে মারপিটের ভিডিও পরিবারের নিকট পাঠিয়ে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করার অভিযোগ উঠেছে। প্রবাসে নির্যাতন ও মুক্তিপণ দাবি করার বিষয়ে নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে বিপাকে পড়েছে তার পরিবার। মঙ্গলবার দুপুরে কেশবপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ এনেছেন জিয়াউর রহমানের ভাই কেশবপুর উপজেলার সন্ন্যাসগাছা গ্রামের বেলাল হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে সন্ন্যাসগাছা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে বেলাল হোসেন বলেন, উপজেলার সন্ন্যাসগাছা গ্রামের আবদুল গফুর সরদারের ছেলে দালাল (আদম ব্যাপারী) সোহাগ হোসেন ৪ বছর আগে তার ভাই জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়ে তাকে লিবিয়ায় পাঠিয়ে দেয়। বর্তমানে লিবিয়ায় অবস্থানরত আদম ব্যাপারীর হোতা পাশ্ববর্তী খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বাদুড়িয়া গ্রামের আবদুল আজিজ কিং-এর অধীনে তার ভাই অবস্থান করছে। আবদুল আজিজ কিং এর অধীনে থেকে জিয়াউর রহমান কাজ করায় ২ বছরের টাকা তার (আব্দুল আজিজ) ছেলে আরাফাত হোসেনের মাধ্যমে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বাকী ২ বছরের টাকা আবদুল আজিজ কিং এর নিকট চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে সে তার ভাই জিয়াউর রহমানকে অপহরণ করে অন্যত্র নিয়ে যায় এবং তার ভাইয়ের নিকট থেকে পাসপোর্ট, ভিসা ও নগদ ওই দেশীয় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। সেখানেই তাকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনসহ ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও তাদের মোবাইলে পাঠিয়ে দেয়। এ ঘটনার পর তার ভাই জিয়াউর রহমানকে উদ্ধারপূর্বক দেশে ফেরত আনার জন্য যশোরের জেলা প্রশাসক এবং ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালকের নিকট গত ২৩ মে আবেদন করেন। এরপর সন্ন্যাসগাছা গ্রামের আবদুল গফুরের ছেলে সোহাগ সরদার ও ডুমুরিয়া উপজেলার বাদুড়িয়া গ্রামের আবদুল আজিজের ছেলে আরাফাত হোসেনকে অভিযুক্ত করে কেশবপুর থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে তাদেরকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও লিবিয়ায় অবস্থানরত তার ভাইকে হত্যা করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তার ভাই জিয়াউর রহমানের পাসপোর্ট নম্বর ইঢ ০৬৭০২৬৫, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর ৬৯০৪৯৭১৬৭৫।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি লিবিয়ায় নির্যাতনের শিকার তার ভাই জিয়াউর রহমানকে দেশে ফেরত আনার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণসহ দালাল ও নির্যাতনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বেলাল হোসেনের ভগ্নিপতি হাবিবুল্লাহ ও উপজেলার সুফলাকাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার মোহাম্মদ আলী। এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শুভ্র প্রকাশ দাস বলেন, এ ঘটনার মামলায় দু’জনকে সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাদেরকে যশোর আদালতে সোর্পদ করা হয়।