"বাংলাদেশ ডাটা সফট" কোম্পানিতে কর্মরত অবস্থায় রাজধানীর শ্যামলী ভবনে আগুনে পুড়ে নিহত দিনাজপুরের হাকিমপুর হিলি উপজেলার ১নং খট্রামাধবপাড়া ইউনিয়নের বড়চড়া গ্রামের রাশেদুজ্জামান বাবু (২৭) এর অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ ডাটা সফট কোম্পানি। অনুদানের টাকাসহ যে কোন সময় যে কোন সমস্যায় তাঁর পরিবারের পাশে থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন ডাটা সফট কোম্পানির সহকারী ম্যানেজার মনিরুজ্জামান শাকিল।
আগুনে পুড়ে নিহত রাশেদুজ্জামান বাবু হাকিমপুর হিলি উপজেলার বড়চড়া গ্রামের আবদুর রশীদ এর ছেলে।
মঙ্গলবার (৬ জুন) বিকেল সাড়ে তিনটায় উপজেলার খট্রামাধবপাড়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বড়চড়া গ্রামে নিহত রাশেদুজ্জামান বাবু'র বাবা মা'র হাতে কোম্পানির পক্ষ থেকে অনুদানের নগদ দুই লক্ষ্য পঞ্চাশ হাজার টাকা তুলে দেন ডাটা সফট কোম্পানির সহকারী ম্যানেজার মনিরুজ্জামান শাকিল।
এসময় উপস্থিত ছিলেন খট্রামাধবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাওসার রহমান, হাকিমপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, অত্র ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কাশেম মন্ডল প্রমুখ।
পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিহত রাশেদুজ্জামান বাবু পিতা আবদুর রশীদ ও মাতা মোছঃ মরিয়ম বিবির দুই ছেলে সন্তানের মধ্যে সেই বড় সন্তান। বাবা মা'কে সুখে রাখতে ও ছোট ভাই ইসতেখারজ্জামান এর লেখা পড়ার খরচ যোগান দিতে বাংলাদেশ ডাটা সফট কোম্পানিতে সফটওয়্যার ইলেক্ট্রিশিয়ান পদে যোগদান করে ছিলেন। মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় গত বৃহস্পতিবার (১ জু) রাজধানী শহরের শ্যামলী ভবনে (১৯ তলায়) বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট এর আগুনে পুড়ে নিহত হয় বাবু। সেই সাথে বাবা মা ও ছোট ভাই এর স্বপ্ন পুড়ে ছায় হয়ে যায়। ছোট ভাই ইসতেখারজ্জামান পাউশগাড়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ও বড় সন্তান রাশেদুজ্জামান বাবু'র মৃত্যুতে তাঁরা এখন প্রায় পাগল!
ইউপি চেয়ারম্যান কাওসার রহমান বলেন, নিহত বাবু আমার ইউনিয়নের বড়চড়া গ্রামের আবদুর রশীদ এর বড় ছেলে। আমার জানা মতে সে খুবই ভদ্র ও শান্ত স্বভাবের ছিলো। তার পরিবারের সেই একমাত্র উপার্জনকারী ব্যাক্তি। তার এই অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যুতে আমি শোকাহত। তার পরিবারকে শান্তনা দেওয়ার ভাষা আমার জানা নেই। উপজেলা প্রশাসন ও আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তার পরিবারের যে কোন সমস্যায় আমার তাদের পাশে থাকবো এবং সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো ইনশাআল্লাহ!
ডাটা সফট কোম্পানির সহকারী ম্যানেজার মনিরুজ্জামান শাকিল বলেন, নিহত রাশেদুজ্জামান বাবু আমাদের কোম্পানিতে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি সফটওয়্যার ইলেক্ট্রিশিয়ান পদে যোগদান করেন। তিনি সততা নিষ্ঠার সাথে তার দ্বায়িত্ব পালন করে এসেছেন। গত ১ জুন রাজধানীর শ্যামলী ভবনের ১৯ তলায় অনাকাক্সিক্ষত ভাবে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট এর আগুন লেগে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসলে ১৯ তলা থেকে রাশেদুজ্জামান বাবু,র মরদেহ উদ্ধার করে। আমরা তার অকাল মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোকাহত। আমরা শোকাবহ পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি। আমরা ওই দিন তার মরদেহ পরিবারের নিকট পৌছানো ও দাফন কাজ সম্পূর্ণ করতে নগদ এক লক্ষ্য টাকা দেওয়া দিয়েছি। আজ তার বাবা মা'র হাতে নগদ আড়াই লক্ষ্য টাকা দেওয়া হলো এবং তিনি যে মাসিক বেতন পেতেন কোম্পানি থেকে সেই টাকা তার মা কে আগামী এক বছর (১২ মাস) দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।