বাগেরহাটের শরণখোলাকে স্মার্ট কৃষিতে সয়ংসম্পূর্ণ করতে হলে সেচ ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। এজন্য মৃত খাল উদ্ধার করে পূন:খননের মাধ্যমে পানিপ্রবাহ তৈরীর কোনো বিকল্প নেই। বুধবার (৭জুন) খুলনা কৃষি অঞ্চরের আয়োজনে দিনব্যাপী ক্লাইমেট-স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের আওতায় কৃষি উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি সহ ফসলের বৈচিত্রায়নের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত অবহিতকরণ কর্মশালায় অংশগ্রহনকারী চাষি, জনপ্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা এই দাবি জানান।
তাদের দাবি, শরণখোলার চারটি ইউনিয়নে ফসলি জমির মধ্য থেকে প্রবাহিত পুরনো অসংখ্য খাল দখল হয়েছে। অনেক খাল ভারট হয়ে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পানি সংকটের কারণে এক ফসল ওঠার পর এখনো হাজার হাজার বিঘা জমি অনাবাদি অবস্থায় পড়ে থাকে। এসব খাল দখলমুক্ত করে পুন:খনন এবং ফসলের মাছে সেচ নালা তৈরী করে পানিপ্রবাহ তৈরী করতে পারলে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না।
কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগীতায় শরণখোলার বিভিন্ন এলাকায় এক জমিতে একাধিক ফসল উৎপাদন শুরু হয়েছে। এবছর আমন ধান ওঠার পর উপজেলার শত শত বিঘা জমিতে বোরো, সরিষা, সূর্যমুখী, ভুট্টা, বাদামসহ নানা প্রজাতির ফসল উৎপাদন হয়েছে। পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত হলে শরণখোলা কৃষিতে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব বলে মনে করেন চাষি ও উদ্যোক্তারা।
কৃষি উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি সহ ফসলের বৈচিত্রায়ন, ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার, পতিত জমি চাষের আওতায় আনার মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় ফসলের নিবিড়তা পানি ব্যবস্থাপনা মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা উচ্চ মূল্যের আধুনিক জাতের ফল এবং সবজি আবাদ সম্প্রসারণের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রায়হান উদ্দিন আকন শান্ত। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রকল্প পরিচালক শেখ ফজলুল হক মনি ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার।
কর্মমালায় অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে দাবি উপস্থাপন করেন খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন খান মহিউদ্দিন, শরণখোলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইসমাইল হোসেন লিটন, সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম, সাংবাদিক শেখ মোহাম্মদ আলী, পল্লী বিদ্যুতের এজিএম আশিক মাহমুদ সুমন, সাউথখালী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন খলিল, চাষি মহিউদ্দিন মধু, মনির হোসেন সওদাগর প্রমুখ।
প্রকল্প পরিচালক শেখ ফজলুল হক মনি বলেন, আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। একের পর এক সবজি ফলাতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুমযায়ী কোনো জমি ফেলে রাখা যাবে না। সবাইকে কৃষি কাজে এগিয়ে আসতে হবে। আগামীর কৃষি অফসিজনে ফসল ফলাতে হবে, তাহলে অধিক মূল্যে বিক্রি করা যাবে। তিনি বিভিন্ন কৌশলে প্রজেক্টরের মাধ্যমে চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি খাল খননের আশ্বাস প্রদান করেন। প্রধান অতিথি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ গড়তে কৃষি উন্নয়নে যে কোনো সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হবে। কৃষকদের প্রতিদ বছরের ন্যায় সঠিক সময় সার-বীজ সরবরাহ করা হবে। কৃষির উন্নয়ণে সকল পেশাজীবিদের দলমত নির্বিশেষে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে কৃষকরা অর্থণৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হবে।