ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে ৫নং সদর ইউনিয়ন মহিলা ও কৃষক দলের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্ট সদর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মজিদকে মারপিট করে মাথা ফাটানোর অভিযোগ উঠেছে নিজ দলের নেতা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের ও তার অনুসারী আবদুল কুদ্দুস, সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, সোহেল, ২নং আমগাও ইউনিয়নের ছাত্রদলের সভাপতি জমির হোসেনের বিরুদ্ধে।
হরিপুর সদর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মজিদ বলেন, বুধবার বিকেলে উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পরামর্শ ছাড়াই ইউনিয়ন মহিলা ও কৃষক দলের কমিটি গঠন করা হচ্ছিলো।
আমি বিকেল ৫টার দিকে উপজেলা দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে উপস্থিত অতিথি ও মহিলা এবং কৃষক দলের আহবায়কগনকে বলি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের মুল দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদককের পরামর্শ ছাড়াই কেনো কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এভাবে কমিটি করলে দলের ভাবমূর্তি ও ঐক্য নষ্ট হবে। ইউনিয়ন বিএনপির নেতাদের পরামর্শ নিয়ে কমিটি গঠন করা দরকার। আপনারা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এর সঙ্গে পরামর্শ করে কমিটি গঠন করেন এটা দলের জন্য ভালো হবে। তাই আজকে এই কমিটি ঘোষনা করিয়েন না। এটা বলা মাত্রই উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের আমার সার্টের কলার ধরে টানা হেচড়া করে দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে নিয়ে গিয়ে মারপিট শুরু করে। আমি আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে তার অনুসারী বিএনপি নেতা আবদুল কুদ্দুস,জাহাঙ্গীর আলম, সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, সোহেল ও ২নং আমগাও ইউনিয়নের ছাত্রদলের সভাপতি জমির হোসেন আমাকে এলোপাতাড়ি কিলঘুসি মারতে থাকে। এক পর্যায় আবু তাহের আমাকে কলম দিয়ে মাথায় আঘাত করলে আমার মাথা ফেটে গিয়ে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। পরে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক জয়নুল হক ও উপজেলা বিএনপি'র নেতা মোজাফফর হোসেনসহ উপস্থিত লোকজন আমাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হরিপুর হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে কর্তব্যরত ডাক্তার আমাকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। আমি এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার দৃষ্টান্ত মূলক বিচার চাই।
সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপি'র সাবেক সহ সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, এই অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাটি অত্যান্ত দু:খজনক। দলের কান্তিলগ্নে এমন ঘটনা দলের ঐক্য নষ্ট করবে। এটা যারা ঘটিয়েছে এবং এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জামাল উদ্দিন বলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের দলের দু:সময়ে একজন নিবেদিত ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকের উপর সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে মাথা ফাটিয়ে তাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে। এটা অত্যান্ত দু:খজনক। একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির দ্বারা এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা কাম্য নয়। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে এবং দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ঐক্য বিনষ্ট হয়েছে। আমি এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দলীয় সাংগঠনিক ভাবে ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম বলেন একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের ও তার লোকজন ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মজিদের উপর ন্যাক্কারজনক ভাবে হামলা চালিয়ে তার মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত করেছে এটা অত্যান্ত দু:খজনক। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, হরিপুর সদর ইউনিয়নের কৃষক ও মহিলা দলের ইউনিয়ন কমিটি গঠন হচ্ছিলো, এমন সময় সদর ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মজিদ ঘটনাস্থলে এসে বলে, এই ইউনিয়নের মহিলা ও কৃষক দলের কমিটি গঠন হবে অথচ আমি জানতে পারলাম না কেনো। কমিটি গঠন বন্ধ করা হোক। এই নিয়ে উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে আবদুল মজিদের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। আমি সবাইকে শান্ত করার চেষ্টা করি।এক পর্যায় আবদুল মজিদ উত্তেজিত হয়ে আমার দিকে ধেয়ে আসে,এসময় উপজেলা বিএনপির সদস্য কুদ্দুস সহ কিছু দলীয় নেতাকর্মী তাকে রোধ করার চেষ্টা করতে গেলে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি হয়।