তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন ইউএইচ এ- এফপিও ডাঃ মোঃ আলী এহসান যোগদানের পর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়নে রোগীরা খুশি।
দেশের সর্ব উত্তরের তেঁতুলিয়া উপজেলায় ৫০ শর্যা হাসপাতালে এমবিবিএস ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ রয়েছে ২৮টি তৎস্থলে কর্মরত আছেন ১১ জন। অত্র হাসপাতালে আধুনিক ওটি বিভাগ, প্যাথলোজি ল্যাব, আল্টাসনো মেশিন, ইসিজি মেশিন, এক্স-রে মেশিন, লেবার ওয়ার্ড, টেলি মেডিসিন কর্ণার, জরুরী হটলাইন ই-সেবা সহ অন্যান্য চিকিৎসা সঞ্জামাদি বিদ্যমান আছে। কিন্তু অপর্যাপ্ত জনবলের অভাবে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে হাসপাতালের অনেক জরুরী সেবাকার্যক্রম বন্ধ ছিল। ফলে অনেক জটিল ও কঠিন রোগীকে এসব সেবা নিতে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল বা ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে যেতে হতো। অতিসম্প্রতি ডাঃ মোঃ আলী এহসান ইউএইচ এ- এফপিও হিসেবে যোগদানের পর হাসপাতালের আন্তঃবিভাগ ও বহিঃর্বিভাগে ভর্তি রোগীদের সেই চিত্রপট পুরো পাল্টে গেছে। এখন হাসপাতালে আন্তঃবিভাগ ও বহিঃবিভাগে রোগীরা সরকারি কম খরচে প্যাথলোজিক্যান সেবার পাশাপাশি আল্টাসনো গ্রাম, ইসিজি, জরুরী টেলিফোন ই-সেবা পাচ্ছে। এ ছাড়া ইউএইচ এ- এফপিও এবং আবাসিক মেডিলে অফিসারের একান্ত উদ্যোগে আন্তঃর্বিভাগে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা সেবার পাশাপাশি ভর্তি রোগীদের পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন বিছানা-চাদর, বাথরুম এবং সঠিক মানের ডায়েট পাচ্ছে। বহিঃবিভাগে প্রতিদিন কমপক্ষে ৪ জন এমবিবিএস চিকিৎসক রোগীদের সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নিরলসভাবে সেবা দিচ্ছে। অপরদিকে হাসপাতাল ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার জন্য অকেজো সিসি ক্যামেরাগুলো সংস্কার করে চালু করা হয়েছে। ফলে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা স্বল্প খরচে উন্নতমানের সেবা পাচ্ছে।
হাসপাতালের মা ও শিশু ওয়ার্ডে ৯ নং বেডে ভর্তি কাজল মনি (৯) এর মা বলেন, কন্যার শরীর ব্যথা ও জ¦র নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। হাসপাতাল থেকে সকল ওষুধ পাচ্ছি। এ ছাড়া হাসপাতালের পরিস্কার পরিচ্ছন্ন বিছিনা এবং আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও স্টাফ নার্সদের নিরবিচ্ছন্ন সেবা পেয়ে খুশি।
পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি আঃ করিম বলেন, আমি সর্দি জ¦র ও প্রসাবের সমস্যা নিয়ে গত ৩ দিন আগে ভর্তি হয়েছি। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসারের নিয়মিত তদারকি এবং ওষুধপত্র খেয়ে এখন সুস্থতা অনুভব করছি। হাসপাতাল পরিসংখ্যান সূত্রে জানা যায়, তেঁতুলিয়া হাসপাতালে জরুরী বিভাগে গড়ে ১০০/১৫০ জন এবং বহিঃবিভাগে ২৫০/ ৩০০ জন রোগী সেবা নিতে আসে। আল্টাসনোগ্রাম চালুর পর মে মাসে ৫৬টি এবং চলতি মাসে এপর্যন্ত আরও ৩০টি আল্টাসনোগ্রাম রোগীর সেবা প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালের মাতৃশিশু লেবার ওয়ার্ডে প্রতিদিনই ৩/৪টি নরমাল ডেলিভারী হচ্ছে। হাসপাতালে ডেলিভারী হওয়া রোগীদের বিনামূল্যে সকল ওষুধ প্রদান করা হয়।
এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আলী এহসান আমাদের প্রতিবেদকে বলেন, হাসপাতালে তীব্র জনবল সংকট এবং কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নাই। ১০ জন মেডিকেল অফিসার দিয়ে কিছুটা প্লানপরিকল্পনা করে রোগীদের সেবারমান বাড়ানো হয়েছে। হাসপাতালের মেডিকেল অফিসারদের মধ্যে যাদের আল্টাসনো গ্রাম কোর্স সম্পন্ন করা আছে তাদের দ্বারাই আন্তঃবিভাগ ও বহিঃর্বিভাগে রোগীদের এইর সেবা প্রদান করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সহ জনবল নিয়োগ হলে অন্যান্য সেবাগুলো চালু করা হবে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারীণ সম্পাদক কাজী মাহমুদুর রহমান (ডাবলু) বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা শহরের ন্যায় গ্রামে-গঞ্জে জনসাধারণের চিকিৎসাসেবার আধুনিক মানোন্নয়নে নিরলভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্যসেবা চালু করা হয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি রোগীদের উন্নত চিকিৎসার সব ওষুধপত্রের পাশাপাশি প্রায় ২শত টাকা সমমানের উন্নতমানের খাবার পাচ্ছে। তিনি তেঁতুলিয়া হাসপাতালে নতুন একটি এক্স-রে মেশিন ও এ্যাম্বুলেন্স চালক নিয়োগের জন্য পঞ্চগড়-১ আসনের এমপি আলহাজ¦ মজাহারুল হক প্রধানের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন বলে জানান।