রাজশাহীর পুঠিয়ায় উপজেলা পরিষদের আমবাগান ইজারা নিয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ খাতা-কলমে পরিষদের একজন পরিচ্ছন্নকর্মীর নামে তিনবছরের জন্য মাত্র ৭০ হাজার টাকা দিয়ে বাগান ইজারা দেখায়েছেন। পরিষদের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি নিয়মকে অমান্য করে ইউএনও কৌশলে নামমাত্র মূল্যে তা ভোগ দখল করছেন। এতে করে প্রতিবছর সরকার কয়েক লাখ টাকা রাজস্ব হতে বঞ্চিত হচ্ছে। উপজেলা পরিষদের তথ্যমতে, পরিষদের মধ্যে প্রায় ৫ একর আম বাগান রয়েছে। এ ছাড়া আবাসিক এলাকায় আরো শতাধিক আমের গাছ আছে। সেই সাঙ্গে ডাব-নারিকেলের গাছ রয়েছে প্রায় শতাধিক। গত বছর সকল ফলের বাগান মাত্র ৭০ হাজার টাকায় সুনিল চন্দ্র নামের একজন পরিচ্ছন্নকর্মীর নামে তিন বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছে। আফসার উদ্দিন নামের একজন মৌসুমি আম ব্যবসায়ি বলেন, পরিষদের মধ্যে আম বাগানসহ যা ফলজ গাছ রয়েছে এগুলো প্রকৃত ডাক হলে তিন বছরের জন্য ইজারা মূল্যে হবে কমপক্ষে ৫/৬ লাখ টাকা। কিন্তু এগুলো প্রকাশ্যে ডাকের মাধ্যমে ইজারা দেওয়া হয়নি। শমসের আলি নামের ব্যক্তি বলেন, দুই বছর ধরে অফিসার বাগানের আমগুলো নিজেদের কর্মচারী দিয়ে ভেঙ্গে সেগুলো বাজারে বিক্রি করেন। তারপর, তাদের উধর্বতন কর্মকর্তাদের আম পাঠায়ে নিজেদের গতি ঠিক রেখেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা পরিষদের একজন কর্মকর্তা বলেন, বিগত সময়ে পরিষদের ফল বাগানগুলো সরকারি বিধি মোতাবেক প্রকাশ্যে ডাকের মাধ্যমে ইজারা দেওয়া হতো। তবে বর্তমান ইউএনও এখানে যোগদানের পর থেকে তিনি অনিয়ম করে কৌশলে সকল ফল বাগান নিজে ভোগ করছেন। সে গোপনে একজন পরিচ্ছন্নকর্মীর নামে তিন বছরের ইজারা দেখায়েছেন। আবার খাতা-কলমে ইজারা মূল্যে দেখায়েছেন অর্ধলক্ষ টাকার কিছু বেশি। ওই কর্মকর্তা বলেন, যে পরিচ্ছন্নকর্মীর নামে বাগান ইজারা দেওয়া হয়েছে সে হয়তো তিনি নিজেই জানেন না। ফল বাগান ইজারদার ও পরিষদের পরিচ্ছন্নকর্মী সুনিল চন্দ্র বলেন, শুনেছি বাগানগুলো আমার নামে নাকি ডাক হয়েছে। তবে এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারবো না। আম বাগানসহ বিভিন্ন ফলগুলো কে ভোগ করছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, 'আমি পরিষদে ছোট পদে চাকুরি করি' আর এ বিষয়ে কোনো জবাব দিতে চাচ্ছি না। তবে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ বলেন,অতীতে উপজেলা পরিষদের আমগাছগুলো কোনো দিনই ইজারা দেওয়া হয়নি। বরং বারোভূর্তে খেত। আমি যোগদান করার পর সরকারের নিয়মনুযায়ী ইজারা দেওয়া হয়েছে। উপজেলা পরিষদের কর্মচারী ইজারা নেওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিতি বলেন, সে পরিষদের স্থায়ী কর্মচারী না। সে অস্থায়ী একজন কর্মী।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম হীরা বাচ্চু বলেন,আি যদ্দুর জানি নিয়মানুসারে ইজারা দেওয়া হয়েছে। পরিষদের কর্মকর্তা বা কর্মচারিরা গোপনে বা কৌশলে ইজারা নিতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।