ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে মোবারকগঞ্জ চিকিলের গ্রাচুইটির পাওনা টাকা না পেয়ে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা, শ্রমিক ও কর্মচারিরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। ভুক্তভোগিরা একসঙ্গে গ্রাচুইটির পুরো টাকা পাঁচ্ছে না তাঁরা। কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করায় সেই টাকা কোনো কাজে আসছে না। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে তাঁদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। টাকার অভাবে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালাতে পারছে না। কেউ কেউ অসুস্থতায় ভুগছেন, ছেলে মেয়ে বিয়ে দেবার সময় ও মারাত্নক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতেও পারছে অনেকেই। কেউ আবার জমি বিক্রি করে চিকিৎসার খরচ চলাচ্ছেন।
মোবারকগঞ্জ চিনিকলের অবসরপ্রাপ্ত সিআইসি সোহেল আহম্মেদ বলেন, টাকা নেই এ অজুহাতে তাঁদের মাসের পর মাস, বছরের পর বছর হতাশায় ভুগতে হচ্ছে। চাকরি শেষে তাঁদের ন্যায্য পাওনা পেলে তাঁরা অবসর সময়টা ভালোভাবে কাটাতে পারতেন। কিন্তু পরিবার নিয়ে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। অনেক রয়েছে তাদের ব্যবসা বা জমাজমি নেই যে, কিছু একটা করে খাবে।
মোবারকগঞ্জ চিনিকল থেকে ২০১৮ সাল থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত ২২০ জন অবসরে গেছেন। গ্রাচুইটিসহ তাঁদের মোট পাওনা ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এই টাকার জন্য তাঁরা ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও কোনো ফল পাঁচ্ছে না। অবসরে যাওয়া ব্যাক্তিরা বলছেন সবাই চাকরি শেষে কিছু টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরে। এই টাকা দিয়ে তাঁরা বাকি জীবনটা কীভাবে পার করবেন, তাঁর পরিকল্পনা করেন। তাঁরাও সেভাবে পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু টাকা না পাওয়ায় তাঁদের সব পরিকল্পনা শেষ হয়ে গেছে। নিয়ম রয়েছে অবসরে যাওয়ার এক মাসের মধ্যে তাদের পাওনা পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু টাকা না থাকার কারণে সবাই হতাশাগ্রস্থ। অনেকে মারা গেছে, তারা হলো সিআইসি রায়হান, সিডিএ মোতালেব, প্যান অপারেটর সব্দুলসহ অনেকে।
সাইফুদ্দিন খালেদ পিকুল জানায়, আমরা অবসরে যাওয়ার পর থেকে অনেক কষ্টে আছি। এ টাকা কবে পাব তার কোন নিশ্চয়তা নেই। অনেকে পাওনা টাকা না পাবার কারণে ছোট খাট পেশায় জড়িয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে দিন কাটাচ্ছে। বিশেষ করে চিনিকলটি লোকসান দিয়ে আসছে কয়েক বছর। যে কারণে তাঁরা আর্থিক সংকটে পড়েছে, তার পর বর্তমানে কর্মরতরা প্রতি মাসের বেতন ভাতা নিয়মিত পেয়ে থাকেন। তারপরও বিষয়টি নিয়ে সরকারের কাছে করপোরেশনের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়েছে। সরকার সম্প্রতি মোটা অংকের টাকা দিয়েছে যা অবসরে যাওয়া ব্যাক্তিদের মাঝে বন্টন করে দিয়েছে মোচিক কর্তৃপক্ষ। দায়িত্বশীল ব্যাক্তিরা বলছেন টাকা পেলেই তারা ভুক্তভোগিদের মাঝে বন্টন করবেন।