খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, আমরা যে সুস্থ জাতির স্বপ্ন দেখছি, সেটি নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা ছাড়া সম্ভব নয়। সব নাগরিকের কর্মক্ষমতা ও সুস্থ জীবনযাপনের প্রয়োজনে খাদ্য, পুষ্টি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন কাজ। ভেজাল প্রতিরোধ এখন শুধু জনস্বাস্থ্যের বিষয় নয়, সুস্থ জাঁতি গঠনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজ রোববার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে দশম ১আন্তর্জাতিক নিরাপদ খাদ্য ফোরাম’ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে তিনি এসব কথা বলেন। সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, খাদ্য মমন্ত্রণালয় ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ শুধু নয়, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব। এটি একটি অংশীদারত্বমূলক কাজ, যা এখন আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। খাদ্যে পুষ্টি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ জানিয়ে তিনি বলেন, জীবন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভোক্তার দোরগোড়ায় ভেজালমুক্ত নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে ‘নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩’ গৃহীত হয়। এ আইন বাস্তবায়নে ও সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। মন্ত্রী বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে বহুমুখী সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য আমাদের বিস্তৃত ও কার্যকর পদক্ষেপ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে, যা সব খাদ্যগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করবে। সেজন্য যথাযথ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রয়োজন। সক্ষমতা বৃদ্ধি ও বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার জন্য প্রয়োজন যথাযথ বিনিয়োগ। এ ক্ষেত্রে ডিজিটাল ও স্মার্ট বিনিয়োগের কথা আমরা ভেবে দেখতে পারি। দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠানে খাদ্য নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাংলাদেশের লক্ষ্য বৈশ্বিক ক্ষুধা ও মানব উন্নয়ন সূচকে তার র্যাংকিং উন্নত করতে, পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা করে কীভাবে খাদ্যের মান উন্নত করে এবং অপচয় কমিয়ে রপ্তানি সুবিধা বাড়ানো যায়, তার ওপর আলোচনা করা হয়। এ সময় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কাইউম সরকার বলেন, বাংলাদেশের খাদ্যের মান বৃদ্ধি ও এই খাতে বৈদেশিক বাণিজ্য বৃদ্ধিতে রোডম্যাপ প্রণয়নে এই ফোরাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে। ফোরামটি কৃষি ব্যবসায়ীদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে যাতে আইএফসি-এর বিভিন্ন খাদ্য নিরাপত্তা অনুশীলনের ওপর ভিত্তি করে খাদ্যকে নিরাপদ, আরও পুষ্টিকর ও স্থিতিস্থাপক করার কৌশল তারা রপ্ত করতে পারেন। তিনি বলেন, সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে সহায়তা পেয়ে দেশের কৃষি খাতের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। কৃষি ব্যবসা শিল্পে বেসরকারি ও সরকারি খাতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে, ফোরামটি শুধু বাংলাদেশেই নয় অন্যান্য উদীয়মান বাজারেও খাদ্য খাতের উন্নয়নে সরকারের প্রচেষ্টায় অবদান রাখবে। এবারের ১০ম আন্তর্জাতিক এ ফোরামে ২৪ দেশের ৪৩ জন আইএফসি প্রতিনিধি, নীতিনির্ধারক, শীর্ষ খাদ্য উৎপাদক, নির্মাতা, খুচরা বিক্রেতা, পর্যটন কোম্পানি, কোল্ড চেইন লজিস্টিক সরবরাহকারী, ভোক্তা সংস্থা ও অন্যান্য মূল স্টেকহোল্ডারসহ ৩০০ জন প্রতিনিধিসহ অংশগ্রহণ করেছেন।