ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল সদরে উচালিয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকেই বাজার। গিজাগিজি ঠেলাঠেলি করে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করার আতঙ্কে ভোগে শিশু শিক্ষার্থীরা। বাজার ও গাড়ি পেরিয়ে বাচ্চাদের নিয়ে যেতে নিয়মিত বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে মহিলা অভিভাবকদের। এ বিষয়ে ক্ষুদ্ধ পুরূষ অভিভাবকরাও। এসএমসি’র সভাপতি বলেন, শিশু শিক্ষার্থীদের স্বার্থে এখান থেকে ব্যবসায়িদেরকে সরিয়ে দিয়েছিলেন তৎকালীন ইউএনও। কার ইশারায়? তারা আবার প্রধান ফটকে বসে ব্যবসা শুরূ করছেন। বুঝতে পারছি না। আমরা এটা হতে দিব না। সরজমিনে দেখা যায়, সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়ক ঘেঁষেই সরাইল উচালিয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান। উচালিয়াপাড়া, জিল্লুকদার পাড়া, নিজসরাইল, বড়দেওয়ানপাড়াসহ আশপাশের গ্রামের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এই বিদ্যালয়ে পড়ছে। সকাল ৯টা থেকে শুরূ হয় পাঠদান। তাই ৯টার মধ্যেই শিশুরা বাবা মা ও অভিভাবকের হাত ধরে আসে বিদ্যালয়ে। স্কুল সংলগ্ন হাসপাতাল মোড়ে এখন মাঝে মধ্যেই জ্যাম লেগে যায়। তাই শিশু শিক্ষার্থীদের সড়ক পারাপারেও রয়েছে ঝুঁকি। এরমধ্যে এখন মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিদ্যালয়টির প্রধান ফটকের বাজার। সকাল ৭টা থেকেই ফটকের সামনে পসরা সাজিয়ে বসেন হরেক রকমের ব্যবসায়িরা। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে ক্রেতা-বিক্রেতার সংখ্যা। বাজার ঘেঁেষ দাঁড়িয়ে থাকে অটোরিকশা, পিকআপ ভ্যান ও ট্রাক্টর। অনেক সময় দূর থেকে বিদ্যালয়ের ফটক দেখা যায় না। একা আসা শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় হারিয়ে ফেলে দিশেহারা হয়ে যায়। এত মানুষ ও গাড়ি ঠেলতে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। বাচ্চা নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে চরম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় মহিলা অভিভাবকদের। বিদ্যালয়ের ফটকের সামনে দাঁড়ানোর জায়গা না থাকায় অস্বস্থিবোধ করছেন অভিভাবকরা। বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ, শিশু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে স্বস্থি ফিরিয়ে আনতে দ্রƒত ফটকের সামনের বাজার উচ্ছেদ একান্ত প্রয়োজন। অভিভাবক মো. আনোয়ার হোসেন ও মো. ইফতেহারূল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের ফটকে বাজার কোথাও দেখিনি। এরপর গাড়ি পার্কিং। সকালে শিক্ষার্থীদের নিয়ে খুবই কষ্টে ভেতরে প্রবেশ করতে হয়। শিশু শিক্ষার্থীরা ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে পড়ে। পাঠদানে বিঘœ ঘটে। আমাদেরও অনেক কষ্ট হয়। সড়ক দূর্ঘটনায় ঘটতে পারে শিশু শিক্ষার্থীর প্রাণহানির মত ঘটনা। এই অবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. শামসুন্নাহার সুলতানা হক বাজার বসার কথা স্বীকার করে বলেন, তাদেরকে নিয়মিত নিষেধ করছি। কিন্তু তারা সরছেন না। বিদ্যালয়ের এস এম সি’র সভাপতি মো. রূহুল আমিন রূবেল বলেন, এই বাজার অবশ্যই বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের জন্য ক্ষতিকর। একসময় ইউএনও মহোদয় ফটকের সামনে থেকে বাজার উচ্ছেদ করেছিলেন। এখন আবার শিক্ষার্থীরা প্রবেশের সময়ে বাজার জমছে। শিক্ষার ক্ষতি করে বাজার আমরা মেনে নিতে পারি না। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব। সরাইল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নওশাদ মাহমুদ বিদ্যালয়ের ফটকের সামনে কোনভাবেই বাজার বসাতে পারেন না। বিষয়টি নিয়ে আগামী আইন-শৃঙ্খলা সভায় কথা বলব।