দেশের সড়ক নিরাপত্তায় ৩৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক। রোড সেফটি প্রজেক্টের আওতায় নির্বাচিত উচ্চঝুঁকিপূর্ণ মহাসড়কগুলোর জন্য ও সড়কে দুর্ঘটনা কমাতে এ অর্থ সহায়তা দিয়েছে সংস্থাটি। প্রকল্পের আওতায় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সড়ক নিরাপত্তা উন্নয়নে পাঁচ হাজার কিলোমিটার মহাসড়ক নিরাপদ করা হবে। একইসঙ্গে বিভিন্ন ইন্টার সেকশনে ক্ষুদ্র ও মাঝারি মাত্রার পূর্তকাজের মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। ট্রাফিক পুলিশসহ অন্য সংস্থার ব্যবহারের জন্য স্থাপন করা হবে জাতীয় ডাটা সিস্টেম। জয়দেবপুর থেকে এলেঙ্গা ও নাটোর থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত ১৪০ কিলোমিটার মহাসড়কে বসানো হবে সিসি ক্যামেরা। স্থাপন করা হবে ইন্টিগ্রেটেড ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনসিডেন্ট ডিটেকশন সিস্টেম। কেউ যদি বেপরোয়া গাড়ি চালায় ও কোনো দুর্ঘটনা ঘটায়, তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধরা পড়বে। বুধবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্প (বিআরএসপি) উদ্বোধন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। প্রকল্প বিষয়ক উপস্থাপনায় আরও বলা হয়, ‘সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্প’ বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে সড়ক নিরাপত্তায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করবে। প্রকল্পের আওতায় এরইমধ্যে জয়দেবপুর থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার ও নাটোর থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার সড়কে প্রাথমিকভাবে বসানো হচ্ছে নম্বর প্লেট শনাক্তকরণ ডিভাইস। এতে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে কোনো চালক পার পাবেন না। প্রকল্পের মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা পরিমাপ, উন্নত নকশা, প্রকৌশল সুবিধা, গতি প্রয়োগ, জরুরি সেবাসহ ব্যাপক সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হবে। এ পদক্ষেপের মাধ্যমে দুই মহাসড়কে ৩০ শতাংশের বেশি সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে সক্ষম হবে। অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়কে নিরাপত্তাহীনতায় বছরে ক্ষতি সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। সড়ক নিয়ে আমাদের চিন্তা-ভাবনা দূরদর্শী। কিন্তু বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া খুবই দুর্বল। এটা আমাদের বড় সমস্যা। এতে ব্যয় ও সময় দুটোই অপচয় হয়। শুধু বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার জন্য প্রকল্পে বিলম্ব হয়। বিশ্বব্যাংক এখন আমাদের সড়ক নিরাপত্তায় আর্থিক সহযোগিতা করছে। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে পদ্মা সেতু নিয়ে ভুল বোঝাবোঝি ছিল। দেশের কিছু বাঘা লোক এর পেছনে জড়িত ছিল। সময় পালটেছে, বিশ্বব্যাংক আমাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। তারা আমাদের বাজেট সহায়তাও করছে। মন্ত্রী আরও বলেন, শেখ হাসিনার আমলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় যে পরিবর্তন হয়েছে, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। একদিনে ১০০ সেতু উদ্বোধনের ইতিহাস সৃষ্টি করেছি। যুদ্ধ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অনেক ক্ষতি হচ্ছে। আমাদের প্রথম কাজ হলো- জনগণ ও পরিবেশকে রক্ষা করা। যে মানুষের জন্য এত উন্নয়ন করছি, তাদের নিরাপত্তা দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান, ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন ছিদ্দিক, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী, সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. ইসহাক প্রমুখ।