গত ১২ জুন খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের হার নিয়ে সন্দেহ অবিশ্বাস দেখা দিয়েছে। খোদ সরকারি দলের প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থীরা অভিযোগ কারণ,ফলাফলে তাদের পক্ষে যে ভোট দেখানো হয়েছে, সেটি তাদের প্রকৃত ভোট নয়। তারা এমন অভিযোগ করেছেন যে ভোট পড়ার হার এবং নির্বাচনের ফলাফল ‘কারসাজি’ করা হয়েছে। খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। নির্বাচন কমিশন তথ্যানুসারে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৪৩৩ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এ হিসাবে প্রায় ৪৯ শতাংশ ভোট পড়েছে। কিন্তু নির্বাচনে অংশ নেয়া স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী শফিকুল রহমানের দাবি সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে ২২ শতাংশ। খুলনা প্রেসক্লাবে ১৩ জুন দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রায় ৪৯ শতাংশ ভোট কি ভাবে ? কে ভোট দিল, কখন ভোট দিল, তা বুজতে পারছি না। বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে মনে হয়েছে ২০ থেকে ২২ শতাংশ ভোট পড়েছে। ইভিত্রম যন্ত্রের মাধ্যমে কারচুপি হয়েছে অভিযোগ করে শফিকুর রহমান বলেন, মানুষ ভোট দিয়েছে একদিকে, চলে যাচ্ছে আরেক দিকে ভোটাররা তাঁর টেবিল ঘড়ি প্রতিকে ভোট দিলেও তা চলে গেছে অন্য প্রতিকে। এসব কথা তিনি ভোটারদের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন। এ নির্বাচনে সরকারের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি অংশ নেয় নি। তাই নিরুত্তাপ ও প্রতিদন্ধিতাহীন এ নির্বাচনে সরকারি দলের পার্থী নির্বাচিত হবেন, এটা আগে থেকেই সবাই ধরে নিয়েছিলেন। কিন্তু খুলনায় বিভিন্ন দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ পরাজিত মেয়র পার্থীরা ভোটের হার দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, বিএনপির কোনো প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেকের শক্ত কোনো প্রতিদন্ধী ছিল না। ফলে ১২ জুনের নির্বাচন ছিল একেবারে উপাত্তহীন। দিনভর ভোটের মাঠ ছিল একেবারে ফাঁকা। এমন পরিস্থিতিতে কোথা থেকে এত ভোট পড়েছে। তা তারা বুজতে পারছেন না। এ ব্যাপারে খুলনার রিটার্নিং কর্মকর্তার কোনো মন্তব্য পাওয়া না গেলেও প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুর আওয়াল বলেন, এ অভিযোগ সত্য নয়, এটা তিনি বিশ্বাস করে না। এমন কোনো ঘটনা ঘটলে, তার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইদিন অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে নির্বাচন কমিশন আনন্দমুখর বললেও ইসলামি আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী সৈয়দ ফায়জুল করিম ২২ নং ওয়ার্ডে এক কেন্দ্র পরিদর্শন করতে গেলে সরকারি দলের পার্থী সমর্থকদের দ্বারা তিনি আক্রান্ত হয়ে আহত হয়েছেন তার কিছু কর্মীও আক্রান্ত হয়েছেন। পরে অনুষ্ঠিতব্য রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে ইসলামি আন্দোলন তাদের পার্থী প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। ফলে সব দলকে নির্বাচনে থাকার ব্যর্থতা যেমন নির্বাচন কমিশনের তেমনি অংশ নেয়া প্রার্থীদের ধরে রাখার ব্যর্থতাও তেমন। ফলে জাতীয় নির্বাচনে তারা কতটা সফলতা দেখতে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ সংশয় বাড়ছে।