জামালপুর বকশীগঞ্জে পৃখক পৃথক হত্যা মামলার আসামি দুই ইউপি চেয়ারম্যান কারাগারে রয়েছেন। ব্যাহত হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম। একারনে নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত দুই ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু ও বগারচর ইউনিয়নের আলীরপাড়া গ্রামের শহিদ পরিবারের সন্তান, কৃষক আবুল কাসেম ওরফে দুলাল হত্যা মামলার আসামি বগারচর ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেকুর রহমান প্রমানিক মাসুম কারাগারে রয়েছেন।
রোববার ভোরে সাধুর পাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বাবুকে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তাস্তর করেছে র্যাব। দুপুরে বাবুকে জামালপুর আদালতের মাধ্যেমে কারাগারে পাঠানো হয়। ওপর দিকে ১২ জুন সোমবার কৃষক আবুল কাশেম দুলাল হত্যা মামলার আসামী, বগারচর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোসাদ্দেকুর রহমান প্রামাণিক মাসুমকে কারাগারে পাঠান আদালত। চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন। সাংবাদিক নাদিম হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পর তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু কোন এক অদৃশ্য শক্তির কারণে কৃষক আবুল কাশেম দুলাল হত্যা মামলার আসামি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোসাদ্দেকুর রহমান প্রামাণিক মাসুমের বিরুদ্ধে এখনো কোন সাংগঠনিক ব্যাবস্থা গ্রহন না করায় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা যায়, সংবাদ প্রকাশের জের ধরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ জুন (বুধবার) রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ভুক্তভোগী সাংবাদিক নাদিম বাড়ি ফেরার পথে বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় বাবু চেয়ারম্যান তার লালিত সন্ত্রাসীদের দিয়ে সাংবাদিক নাদিমের উপর হামলা করে। একপর্যায়ে সাংবাদিক নাদিমের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে বাবু ও তার সন্ত্রাসী গ্রুপ দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
পরের দিন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাংবাদিক নাদিম মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে সাধুর পাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে প্রধান অভিযুক্ত করে বকশীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওপর দিকে গত ২৭ এপ্রিল চেয়ারম্যান মাসুম প্রামাণিকের নিজ গ্রাম আলীরপাড়া গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম দুলালকে প্রকাশ্যে দিনের বেলায় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হত্যার ঘটনায় তাঁর জড়িত থাকার বিষয়ে বকশীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় তিনি দীর্ঘ দিন আত্মগোপনে থেকে হাইকোর্ট থেকে ২৮ দিনের আগাম জামিনে আসেন।
অতপর ১২ জুন জামালপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজিরা দিয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন। ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেকুর রহমান প্রামাণিক মাসুমের বিরুদ্ধে হত্যা, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, কর্মসৃজন প্রকল্পের অতিদরিদ্রদের টাকা আত্মসাৎ, ইউপি সদস্য ও সাধারণ মানুষের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ, যুবলীগ নেতাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার কল রেকর্ড ফেসবুকে ভাইরাল, শ্রমিকদের কাছে ঘুষ চাওয়ার একটি অডিও ক্লিপ ফেসবুকে ভাইরাল, এসব নানা অপকর্মের অভিযোগে তাঁকে বহিস্কার ও বিচারের দাবীতে বগারচর ইউনিয়ন পরিষদের ১১ জন ইউপি সদস্য ও স্থানীয়রা বিক্ষোভ-মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।