খুলনার পাইকগাছায় হরিঢালী মুজিববর্ষের ঘর দেওয়ার কথা বলে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ভূমিহীনদের অতিমাত্রায় নিশ্চয়তা দিয়ে ইউপি সদস্য সহ অনেকেই তাদের সঞ্চিত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে অহরহ। অভিযোগ রয়েছে প্রকৃত ভূমিহীন ও আশ্রয়হীন পাচ্ছেন না প্রধানমন্ত্রী উপহারের ঘর। সম্প্রতি উপজেলার উত্তর সলুয়া গ্রামের হতদরিদ্র দেলোয়ার মজলিসের স্বামী পরিত্যক্তা কন্যা হামিদা খাতুনের স্বপ্ন ছিল মুজিববর্ষ ঘরে তার আশ্রায়রের ঠিকানা হবে। স্বপ্ন পুরণে এলাকার ইউপি সদস্য বিষ্ণুপদ রায়কে তার অভিব্যাক্তি জানালে তিনি বলেন, কিছু টাকা খরচ লাগবে। একপর্যায়ে ধারদেনা করে ২০ হাজার টাকা তুলে দেন উপজেলার হরিঢালী ইউপির ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য বিষ্ণুপদ রায়ের হাতে। নিশ্চিত ঘর হবে এমন আশায় স্বামী পরিত্যক্তা অসহায় হামিদার চোখে মুখে স্বপ্নের হাসি ফোটে। কিন্তু বিগত ১ বছর অতিবাহিত হলেও সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি হামিদার। কথার ফুলঝুরি আর মিথ্যা আশ্বাসের বুলি আওড়িয়ে ইউপি সদস্য বিষ্ণু থাকে বহাল তবিয়তে। এমতাবস্থায় স্বপ্ন যখন বিলিন ঠিক তখনই অসহায় হামিদা খাতুন উপায়ন্ত না পেয়ে এলাকার মানুষের কাছে বিষয়টি প্রকাশ করে দেয়। এরপর কিছু ব্যাক্তির পরামর্শে বিষয়টি নিয়ে গত ৬ মার্চ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন হামিদা। একই ওয়ার্ডে আয়ের আলী শেখ, জাহাঙ্গীর শেখ, আলম শেখ ও মজলিশ সহ আরো অনেকের নিকট খেকে কয়েক লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি প্রকাশ না করতে ঐ ব্যাক্তিদের টাকা ফেরতের কথাসহ ভয় ভীতি দিচ্ছে ইউপি সদস্য। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী হামিদা জানান, ইউপি সদস্য বিষ্ণুর দেয়া অর্থ আজও ফেরৎ দেয়নি, যা নিয়ে হামিদা ইউপি সদস্য বিষ্ণুর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেন। এদিকে হামিদার অসহায়ত্ব দেখে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সুপারিশক্রমে তার ঘরের ব্যবস্থা হয়। এদিকে অনেকে ভুক্তভোগীই ইউপি সদস্য বিষ্ণুর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেন। অভিযোগে প্রকাশ ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ভূক্তভোগী হামিদা খাতুন বলেন, বিষয়টি জানাজানি হলে ইউপি সদস্য বিষ্ণু গোপণে টাকা ফেরৎ দিতে জোরাজুরী করছে। কিন্তু আমি ইউএনও স্যারের মাধ্যমে টাকা ফেরৎ নিতে চাই। ইউপি সদস্য বিষ্ণুপদ রায় জানান, এসব লোকজন যা বলছে তা ফাও কথা। ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে তার গ্রুপিং রয়েছে, তিনি এসব করছেন। ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাফর সিদ্দিকী রাজু বলেন, আমি জানি ঘর দেওয়ার কথা বলে হামিদার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছে। ইউপি সদস্য বিষ্ণু এ বাদেও অনেক মানুষের কাছ থেকে ঘর ও কার্ড দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছে। সাধারন মানুষকে যারা হয়রানি করবে তারা আমার লোক হতে পারে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, তদন্ত করে উপযুক্ত প্রমাণ পেলে জেলায় স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।