নীলফামারীর সৈয়দপুর দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড জড়িয়ে পড়েছে একের পর এক অনিয়ম দুর্নীতিতে। গত ১৮ জুন এক নারী গ্রাহকের এফডিআরের ৩৪ লাখ টাকা উধাও হয়ে যায় অ্যাকাউন্ট থেকে। ওই খবরটি জাতীয় দৈনিক ভোরের দর্পণসহ বেশ কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশ হলে গ্রাহকের মধ্যে তোলপার সৃষ্টি হয়। পরদিন ব্যাংক বন্ধ থাকায় গ্রাহকরা অনেকটা ছিল টাকা হারানোর আতংকে।
রোববার ১৮ জুন ব্যাংক খোলা হলে অ্যাকাউন্ট চেক করতে গ্রাহকদের উপচেপড়া ভীড় লেগে যায় ব্যাংকে। এদিনও কয়েকজন গ্রাহকের একাউন্টে জমাকৃত টাকা শুন্য থাকায় তা সমন্বয় করা হয়। এর পরিমাণ প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। এ ছাড়া ওইদিন শতাধিক গ্রাহক ব্যাংক থেকে তাদের আমানত তুলে নেয়।
সৈয়দপুর শাখার এ অনিয়ম ও দূর্নীতি তদন্তে প্রধান কার্যালয় থেকে অডিটের জন্য ২ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আসেন। তারা গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট চেক করা, অভিযোগের ভিত্তিতে সমন্বয় ও আমানত উত্তোলনে সহযোগিতা করাসহ অন্যান্য বিষয় তদন্ত করছে বলে জানানো হয়।
অপরপাশে এক নারী গ্রাহক ব্যাংকে গিয়ে তার অ্যাকাউন্ট চেক করলে হিসাবে গড়মিল মেলে। যার পরিমান ১৪ লাখ টাকা। এদিকে শহরের গোলাহাট এলাকার শেফালী রানী নামে অপর এক গ্রাহকের প্রায় ১০ লাখ টাকার হিসেব মিলছে না। একই এলাকার মনোরঞ্জন নামের আরেক গ্রাহকের ১৮ লাখ টাকাও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে হাওয়া হয়ে গেছে। এভাবে আরও প্রায় ৩ জন গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট শুন্য পাওয়া যায়। ওই গ্রাহকরা ব্যাংকের এমন কাজে ক্ষিপ্ত। তারা অভিযোগ দিতে চাইলে তা গ্রহণ করা হয়নি। শাখা ম্যানেজার দিশেহারা। তিনি দ্রুত টাকা সমন্বয় করে সমাধানের চেষ্টা করার কাজে ব্যতিব্যস্ত। ওই ব্যাংকে প্রায় ৪২ লাখ টাকার অনিয়মের ঘটনা বেড়িয়ে এসেছে।
এদিকে সংবাদকর্মীরা তথ্য নিতে ব্যাংকে গেলে তাদের ভিতরে প্রবেশে বাঁধা দেয়া হয়। পরে ব্যাংক ম্যানেজার সুলতান মাহবুব খান প্রবেশ করতে দিলেও তদন্তে আসা কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলতে দেয়া হয়নি।
আরেক গ্রাহক শেফালী রানী বলেন, আমারও প্রায় ১০ লাখ টাকার হিসাব পাচ্ছিনা। তবে এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে নিষেধ করেন ব্যাংক ম্যানেজার। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার শরিফা বেগম নামে এক গ্রাহক তার এফডিআরের ৩৪ লাখ টাকা তুলতে গিয়ে দেখেন অ্যাকাউন্ট শুণ্য। কে যেন তার টাকা তুলে নিয়েছে। পরে ওই শাখার এসিস্টেন্ট রিলেশনশিপ ম্যানেজার (এআরএম) কে পাকড়াও করে ম্যানেজারের রুমে অবরুদ্ধ করলে সে স্বীকার করে ওই টাকা তসরুপের কথা। সে জানায়, এই দূর্নীতির সাথে ব্যাংকের আরও অনেকে জড়িত আছেন কিন্তু তাদের নাম তিনি আঁড়াল করেন। বর্তমানে সিটি ব্যাংক সৈয়দপুর শাখায় চলছে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট চেক এবং আমানত উত্তোলনের হিড়িক।