কুমিল্লার হোমনায় প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে ব্যাংকের ভেতরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন সালমা আক্তার (২২) নামের এক কলেজছাত্রী। কল পেয়ে প্রেমিক সাকিল দ্রুত ঘটনাস্তলে গিয়েও প্রমিকাকে বাচানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। প্রেমিকাকে বাঁচাতে না পেরে সাকিল বার বার দেওয়ালে মাথা ঠুকে নিজেকেও আহত করে। রোববার বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে উপজেলার ঘারমোড়া ইউনিয়নের মনিপুর বাজারে ব্র্যাক ব্যাংকের এজেন্ট শাখায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ রাতে লাশ উদ্ধার করে। পরের দিন সোমবার ময়না তদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সালমা আক্তার ওই ব্যাংকের এজেন্ট শাখায় চাকুরী করতেন। তিনি ঘারমোড়া ইউনিয়নের মনিপুর গ্রামের মৃত সিদ্দিক মিয়ার মেয়ে ও উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, সালমার পরিবারে তার মা ও ভাবীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ হতো। বাবাহীন পরিবারে এমন অশান্তি তিনি পছন্দ করতেন না। প্রতিদিনের পারিবারিক বিবাদে তিনি মানসিককভাবে ভেঙে পড়েন। রোববার সকালে তাঁর মা ও ভাবীর ঝগড়ার কারণে নাস্তা না খেয়েই ব্যাংকে চলে আসেন। বিকালে বাড়ি ফিরেও দেখেন তাদের ঝগড়া বিবাদ রয়ে গেছে। ফলে দুপুরের রান্নাও হয়নি। এতে সালমা আক্তার অভিমান করে তার কর্মস্থলে ফিওে যান। সেখানেই তার প্রেমিক সাকিলকে মোবাইলের ভিডিও কল দিয়ে ব্যাংকের ভেতরে ফ্যানের সঙ্গে উড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেন। সাকিল দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা ভেঙে তার প্রমিকাকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেন। কিন্তু বাঁচাতে ততক্ষণে আর সালমা নিথর হয়ে গেছে। এ ঘটনায় সাকিল মানসিকভাবে মারাত্মক আঘাত পান এবং বার বার দেওয়ালে মাথা ঠুকে নিজেকে আহত করেন। ঘটনা জানাজানি হলে পুলিশ এসে সালমার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এবং সালমার মোবাইল ফোন জব্দ করে। পুলিশের ধারনা, প্রতিনিয়ত পারিবারিক কলহ বিবাদ তার মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফলে পারিবারিক অশান্তি থেকে সৃষ্ট হতাশায় তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন।
সাবেক ইউপি সদস্য মনির হোসেন জানান, সালমা সকালে মা ও ভাবীর ঝগড়ার কারণে নাস্তা না খেয়েই ব্যাংকে চলে যায়। বিকালে বাড়িতে গিয়েও দেখেন তাদের ঝগড়ার কারণে দুপুরের রান্নাও হয়নি। এতে সে অভিমান করে ব্যাংকের ভেতরে ফ্যানের সঙ্গে উড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাসঁ দেয়। এ ব্যাপারে হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আত্মহত্যা। তবুও প্রেমিক সাকিলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছিল। থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।