সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উৎসব পালিত হয়েছে। প্রতিবছর আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে এই রথযাত্রা শুরু হয়। একইভাবে আগামী ২৮জুন “উল্টো রথযাত্রা” শহর প্রদক্ষিন করবে। মঙ্গলবার বিকালে দিনাজপুর শহরের রাজবাটি গুঞ্জাবাড়ি শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির হতে বের হয়ে সড়ক প্রদক্ষিন করে।
‘জয় জয়ন্নাথও’ শ্লোগানে শ্রী শ্রী জগন্নাথ ঠাকুরের রথযাত্রার রশি টানার জন্য শহরের প্রধান প্রধান সড়কে হিন্দু সম্প্রদায়ের শত শত নর-নারী উলুধ্বনী, পূজা-অর্চনা, ঢাক-ঢোল এর শব্দে তীর্থ ভূমিতে পরিণত হয়েছিল।
রাজবাটি গুঞ্জাবাড়ি শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির হতে আন্তজার্তিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইস্কন) এর আয়োজনে শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা বের হওয়ার আগে রথযাত্রা উৎসবের উদ্বোধন করেন দিনাজপুর জজ কোর্টের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শ্যাম সুন্দর রায়।
এসময় তিনি বলেন, শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা ছিল সারা বিশে^ার অসাম্প্রদায়িকতা ও মানবতার সেতু বন্ধন। শ্রী কৃষ্ণের আরেক রূপ হলো শ্রী শ্রী জনন্নাথদেব। যিনি মানুষের কল্যাণে সমস্ত অপশক্তির অন্ধকার দূর করে আলোর পথ দেখিয়েছিলেন। আসুন আমরা শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের আদর্শে এবং ঈশ^র প্রেমে দীক্ষিত হই।
ইস্কন দিনাজপুর মন্দির উন্নয়ন কমিটির সভাপতি শ্রী যুক্ত বিশ^ম্ভর দয়াময় দাসের সভাপতিত্বে অতিথি ছিলেন, হাবিপ্রবি দিনাজপুরের ফসল শরীরতত্ত্ব ও পরিবেশ বিভাগের প্রফেসর ড. শ্রীপতি সিকদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ আনিচুর রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান ইমদাদ সরকার,পূজা উদযাপন পরিষদ দিনাজপুর ও দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি স্বরূপ বকসী বাচ্চু প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন গুঞ্জাবাড়ী শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রী মান বিক্রমী রাম দাস।
উল্লেখ্য, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস মতে, জগন্নাথদেব হলেন জগতের নাথ বা অধীশ্বর। জগৎ হচ্ছে বিশ্ব আর নাথ হচ্ছেন ঈশ্বর।তাই জগন্নাথ হচ্ছেন জগতের ঈশ্বর।তার অনুগ্রহপেলে মানুষের মুক্তিলাভ হয়। জীবরূপে তাকে আর জন্ম নিতে হয় না। এ বিশ্বাস থেকেই রথের ওপর জগন্নাথ দেবের প্রতিমূর্তি রেখে রথ নিয়ে যাত্রা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। রথযাত্রায় শহর ও গ্রামাঞ্চল থেকে ভক্ত-পূণ্যার্থীর সমাগম হয়। সুষ্ঠুভাবে ও শান্তিশৃংখলার সাথে রথযাত্রা সম্পন্নের লক্ষ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। রথযাত্রা শেষে ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।