চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান ও ফটিকছড়ি উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদী থেকে সংগৃহীত ডিম থেকে রেনু ফোটানোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে রেনু বিক্রি শুরু হওয়ার কথা থাকলে ও ক্রেতা না আসায় বিক্রি হয়নি। তবে শুক্রবার সকাল থেকে হালদার পাড়ে রেনু বিক্রির উৎসব শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। গতকাল ক্রেতা না আসায় বিক্রি শুরু না হওয়ায় রেনুর দাম ও নির্ধারন করা হয়নি। রেনুর মূল্য সাধারণত ক্রেতার উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়ে থাকে। তাছাড়া এই বছর বিগত সময়ে পাঁচটি জো/তিথি চলে যাওয়ার মাছ চাষী ও পোনা ব্যবসায়ীরা পুকুরে কৃত্রিম রেনু দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছে। সর্বপরি এবার রেনু বিক্রির মৌসুমে পবিত্র ঈদণ্ডআজহা/কোরবানীর মৌসুম হওয়ায় অনেক রেনু পোনা ব্যবসায়ী কোরবানির ঈদের পশু নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই কারণে অনেক ব্যবসায়ীর এবার রেনু নিয়ে তেমন ব্যস্ততা নেই। শেষ তিথিতে নদীতে ডিম দেওয়ার কারণে মাছ চাষীরা ডিম নিজেদের পুকুরে দেবে কিনা এই শংকায় ও রয়েছে। উপজেলার মুদুনাঘাট, শাহ মাদারী, ব্রিক ফিল্ড হ্যাচারীর বেশ কয়েক জন ডিম সংগ্রহকারী ও রেনু উৎপাদনকারীর সাথে কথা বলে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
ডিম আহরনকারী শাহ মাদারী হ্যাচারীর তদারককারী মোহাম্মদ ইলিয়াস জানান, বৃহস্পতিবার রেনু বিক্রি জন্য মোটামুটি প্রস্তত হয়ে ছিল। কিন্তু ক্রেতা না আসায় বিক্রি হয়নি। তবে শুক্রবার পুরাদমে রেনু বিক্রি শুরু হবে। শেষ মৌসুমে নদীতে মাছ ডিম দেবে এই বিষয়টি ছিল অনেকের ধারনার বাইরে। বিগত সময়ে পাঁচটি জো/তিথি চলে গেলে ও ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ না পেয়ে মাছ ডিম ছাড়েনি। শেষ জোতে ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ পেয়ে নদীতে মাছ ডিম ছেড়েছে। এবার যে এমন মাত্রাতিরিক্ত ডিম ছাড়বে তা ধারনার বাইরে ছিল ডিম আহরনকারীদের। অধিক ডিম ছাড়ার ফলে হ্যাচারী ও কুয়া সংকটের কারণে অনেকে ডিম সংগ্রহ না করে নদী থেকে উঠে এসেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। রেনুর মূল্য কত হতে পারে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন যেহেতু ডিম বেশি হয়েছে রেনুর দাম তুলনা মুলক ভাবে কম হবে। অনেক রেনু পোনা ব্যবসায়ী, কিংবা মাছ চাষী কোরবানীর গরু ব্যবসার সাথে জড়িত। তাই তাদের এবার রেনু ব্যাপারে তেমন আগ্রহ নেই। তবে বৃহস্পতিবার যেসব ডিম আহরনকারীর নিজেদের পুকুর রয়েছে তারা পুকুরে রেনু ছেড়েছে বলে তিনি জানান। তিনি ও তাঁর পুকুরে গতকাল রেনু দিয়েছেন বলে জানান। একই ভাবে মধ্যম মার্দাশা বড়ুয়া পাড়ার ডিম আহরনকারী আশু বড়ুয়া ও তার পুকুরে রেনু দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমকে জানান।
উল্লেখ্য গত শনিবার বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হওয়ায় পরদিন রোববার সকাল ও বিকালে নদীতে জোয়ার ভাটার সময় মাছ নমুনা ডিম ছেড়েছিল। এই দিন দিবাগত মধ্য রাতে মাছ নদীতে পুরাদমে ডিম ছাড়ে। আশাতীত পরিমাণ ডিম ছাড়ায় ডিম আহরনকারীদের মধ্যে খুশী আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। এবার নদীতে ২০ হাজার কেজি ডিম দিয়েছ জানান সংশ্লিষ্টরা।