রাজশাহীর পুঠিয়া-দুর্গাপুর দুই উপজেলায় জমির আকার পরিবর্তনের হিড়িক পড়েছে। উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমোঝতা করে দিনের তুলনা,রাতেই বেশি জমির উর্বর অংশ কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এক শ্রেনির ক্ষমতাসিন দলের নেতারা জমির মাটি বিক্রি করে প্রতিদিন হাজার হাজার আয় করছে। প্রশাসনের নিকট কেউ অভিযোগ দিলে এস্কেভেটরের(ভেকুর)ব্যাটারি খুলে আনতে দেখা যাচ্ছে। তারপর, দুই/একদিন পর আবার মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তা দিয়ে দেওয়ার বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রকাশ্যে জমির আকার পরিবর্তন করা হচ্ছে। কিন্তু তারা কোনোরকম কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করছে না। দুর্গাপুর এবং পুঠিয়া উপজেলার প্রায় ২০টি স্থানে পুকুর খনন এবং মাটি বিক্রি চলছে। মাটি বিক্রেতা ও পুকুর খননকারীদের নিকট সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছেন। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীরা বলছে,শুধুমাত্র অর্থের বিনিময়ের কারণে,পুকুর খননের কার্যক্রম থামছে না। বেশিভাগ তিন ফসলি জমিতেই পুকুর খনন করা হচ্ছে। সাধারণত জমির মাটি কিনছে,ইটভাটার মালিকরা,নীচু এলাকা ভরাটর কাজে ব্যবহার করার জন্য। একদিকে যেমন জমির উর্বরতা কমছে অপদিকে ফসলি জমি কমে পাচ্ছে। আবার মাঝেমধ্যে উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে পুকুর খননের বিরুদ্ধে জেল জরিমানার করছে। কিছু দিন বন্ধ থাকার পর পুনরায় সবকিছু সমঝোতা করে আবার পুকুর খননের কাজ করছে। পুঠিয়া-দুর্গাপুর এলাকার পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এস্কেভেটরের ব্যাটারি খুলে আনছে। মোটা অংকের টাকা দিলে ব্যাটারি দিয়ে দেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা জানায়,এখন পুকুর খনন করতে টাকা খরচ হয় না। মাটি বিক্রি করেই পুকুর খননের টাকা উঠে যায়। মাটি বিক্রেতা আশাদুল,লতিফ, রবিউল ইসলাম, মিনারুল ইসলামরা বলেন, পুঠিয়া- দুর্গাপুর উপজেলার ছয়জন কর্মকর্তার সঙ্গে চুক্তি না করে একদিনও মাটি কাটা সম্ভব না। যেভাবে মাটি কাটা চলছে,এক সময় দুই উপজেলায় ফসলি জমির পরিমাণ একেবারেই কমে যাবে। তারপর, যত্রতত্র পুকুর খননের ফলে বর্ষা মৌসুমে এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেবে। দুর্গাপুর পানানগর গ্রামের বরকত আলি বলেন, ইউএনও,এসিল্যান্ড ও থানার ওসির অনুমতি ছাড়া কোনো স্থানে পুকুর খনন এবং মাটি বিক্রি করা যাবে না। পুঠিয়ার শিলমাড়িয়া সবচেয়ে বেশি পুকুর খনন করার হয়েছে। পুকুর খনন করা বাদে যে বাঁকি জমি রয়েছে। তা আগামীতে ব্যাপক জলাবদ্ধতা হয়ে থাকবে। কিছু লোক পুরাতন পুকুর সংস্কারের নামে মাটি বিক্রি করে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা আয় করছে। আর মাটি বহন করতে গিয়ে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা গ্রামীণ সড়কগুলো নষ্ট হচ্ছে।
এ ব্যাপারে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, আমরা মাঝেমধ্যে উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে পুকুর খননের বিরুদ্ধে জেল জরিমানা করছি। তারপর, যে সব স্থানে পুর্বে পুকুর খনন করা হয়েছে। তার আশপাশে অনেক স্থানে জলাবদ্ধতা হয়ে আছে। সেইসব স্থানে পুকুর খনন করা হচ্ছে।